করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় কয়েক মাস আগেই বিধ্বস্ত হয়েছে ভারত। ভারত এবং বাকি বিশ্বের মাথা ব্যথার অন্যতম কারণ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। দ্বিতীয় ঢেউ থেকে কিছুটা হলেও রেহাই মিললেও করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা কাটছে না। ডেল্টা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশে সংক্রমন বাড়িয়েছে, আশঙ্কা করা হচ্ছে আরও সংক্রামক হতে পারে ডেল্টা প্লাস। সারা পৃথিবীর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ডেল্টা প্লাস ডেল্টার থেকেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। ইত্যাদি নানা আতঙ্কে যখন এমনিই মানুষ ত্রস্ত তার মধ্যেই এল আরেক আতঙ্কের পূর্বাভাস।
সুইজারল্যান্ডের জুরিখের এক নামকরা ইমিউনোলজিস্ট জানিয়েছে ডেল্টার থেকেও ভয়ঙ্কর প্রজাতি আসতে চলছে করোনার। দুনিয়া নাকি সাক্ষী থাকতে চলেছে করোনা ভাইরাসের আরও একটি ভ্যারিয়েন্ট এর যার নাম কোভিড ২২।
জুরিখের ইমিউনোলজিস্ট প্রোফেসর সাই রেড্ডি জানিয়েছেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের যে সমস্ত স্ট্রেনগুলি রয়েছে সেগুলি মিলেমিশে একটি মারাত্মক স্ট্রেন তৈরি করতে পারে। যা করোনার ডেল্টা, বিটা, গামা ইত্যাদি নানা ভ্যারিয়েন্ট এর থেকেও কয়েকগুণ ভয়াবহ হতে পারে। এই নিয়ে গবেষকরা রীতিমতো চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে। তারা বলেছে আসতে চলছে সার্স কোভিড-১৯, এর একটি ‘সুপার ভ্যারিয়ান্ট’।
এটি সম্ভবত আঘাত হানবে ২০২২ সালে, যেটি কোভিড-২২ নামে বিশ্বের কাছে পরিচিত হবে এবং টিকা পায়নি এমন মানুষেরাই এই করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট এর সুপার স্প্রেডার হতে পারে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।অনেকেই মনে করেছিলেন ২০২১ এর শেষে যেভাবে সারা দুনিয়া জুড়ে ভ্যাকসিনেশন চলছে তাতে ভাইরাস থেকে মিলবে মুক্তি। কিন্তু সেই আশায় দেখা দিল কোভিড-২২ এর কালো মেঘ।
জুরিখের ইমিউনোলজিস্ট প্রোফেসর সতর্ক করে বলেন যে করোনা ভ্যাকসিন এবং বুস্টার শটগুলির প্রয়োজন আগামীতেও থাকতে চলেছে এবং হয়ত সারা জীবনের জন্যই থাকবে এগুলো। তিনি জানান, ‘কোভিড-২২ এর রূপ বর্তমানে আমরা কোভিড এর যেমন রূপ দেখছি তার চেয়ে খারাপ হতে পারে। আমাদের আগামী বেশ কিছু বছরের জন্যে একাধিক করোনা টিকা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, করোনা ভাইরাস নিজেকে পরিবেশ ও পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াচ্ছে।
অন্যদিকে কিছুটা একই সুর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ক্রিস স্মিত এর গলায়। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বীকার করছি এখনও করোনা মহামারী সমাপ্ত হয়নি। সংক্রমণ হার কমলেও আবারও নতুন রূপে ফিরে আসছে করোনা। কিন্তু আমাদের এটা ভুললে চলবে না করোনা ভাইরাসটি বিশ্বের একটি দেশের ছোট একটি শহরে একজনের দেহে প্রথম মিলেছিল। সেখান থেকে শুধু সেই দেশকেই নয়, গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস।’