সাধারন মধ্যবিত্ত মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয় চলে যায় নিজের একটা বাড়ি বানিয়ে উঠতে। প্রায় সকলেরই ইচ্ছা থাকে নিজের মাথার উপরে একটা ছাদ থাকুক। ঠিক এমনটাই সাধ ছিল এই দম্পতিরও। তিলে তিলে টাকা জমিয়েছিলেন নিজেদের স্বপ্নের বাড়ী বানাবেন বলে। কিন্তু সেই বাড়ীর গৃহপ্রবেশের দিনই আশ্চর্য্যজনক ভাবে নিজেদের গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করলেন লখনউ নিবাসী এই দম্পতি। নিজেদের তিল তিল করে গড়ে তোলা বাড়িতে এক রাতের বেশি থাকা হল না তাদের।
তাদের এমন চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে হতবাক আত্মীয়-পরিজনরা। যেখানে এই ঘটনার একদিন আগে পর্যন্তও সব ঠিকই ছিল তাদের মধ্যে। আর তার পরেই তাদের জীবনের সবথেকে অন্যতম দিনে কি এমন হলো যে জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলেন তারা? কি এমন হয়েছিল।
আত্মহত্যা করেছেন যে দম্পতি তাদের নাম শ্যাম কিশোর মিশ্র (৩৮) এবং তার স্ত্রী সাধনা মিশ্র (৩২)। তাদের একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে গঙ্গোত্রীবিহারে তারা নিজেদের বাড়ি বানিয়েছিলেন। নতুন বাড়িতে গৃহপ্রবেশের কারণে বাড়িতে উপস্থিত ছিল বহু আত্মীয় স্বজন। সকলের উপস্থিতিতে আর হইচইয়ের গৃহপ্রবেশের আগের দিন থেকেই বাড়িতে ছিল আনন্দের পরিবেশ। তবে সেই আনন্দ যে একদিনের মধ্যেই এইভাবে বিষাদে পরিণত হবে তা কারো কল্পনাতেও ছিল না।
গোমতীনগরের পুলিস সূত্রে জানা গেছে, এই দম্পতি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। জানা গেছে গৃহ প্রবেশ করার আনন্দে অর্কেস্ট্রা পার্টি ডেকে গান-বাজনায় মেতে উঠেছিলেন শ্যাম কিশোর। আসর বসেছিল মদ্যপানের। সেই আসরে অর্কেস্ট্রা পার্টির সঙ্গে গ্রহপ্রবেশের পার্টিতে আসা নর্তকীদের সঙ্গে নাচ-গানে মেতে ওঠেন শ্যাম কিশোর। এই বিষয়ে স্বামী স্ত্রীর বিবাদ বাঁধে। স্ত্রী মানা করলেও শোনেননি শ্যাম কিশোর। তিনি নাচতেই থাকেন নর্তকীদের সাথে। রাতে পার্টি শেষ হলে দুজনে একসঙ্গে ঘরে যান। কিন্তু আত্মীয়রা জানান সেখানেই না থেমে অশান্তি চলতেই থাকে। তারপরই অশান্তি চরমে উঠলে ঘরে ছেলে-মেয়ে ও স্বামী থাকা সত্ত্বেও গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়েন সাধনা। স্ত্রীকে গলায় ফাঁস দিতে দেখে মাথার ঠিক রাখতে পারেননি শ্যাম কিশোর। স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ দেখে আত্মহত্যা করেন স্বামী। বুধবার গৃহপ্রবেশের দিন সকালে দম্পতির ঝুলন্ত মৃতদেহ ঘর থেকে উদ্ধার করেন পুলিশ ও আত্মীয়রা।