পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হওয়ায় বজ্রপাতের ঘটনা দিন প্রতিদিন বাড়ছেই। বাংলার মাঠে ঘাটে কাজ করা মানুষজন এই বজ্রপাতের (Lighting) ঘটনায় সবচেয়ে বেশি বিপদে পরে। বজ্রাঘাতে প্রাণহানির অনেক ঘটনা মাঝে মাঝেই সামনে আসে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে ঠেকানো না যাক তার থেকে বাঁচা তো যেতে পারে। এমন ভাবনাই আসে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র শ্রেয়ক পণ্ডার মনেও। উদ্যোগী হয়ে ভারত সরকারের দ্বারা আয়োজিত এক বিজ্ঞান প্রতিযোগিতায় একটি অভিনব বজ্রপাত প্রতিরোধক ছাতা তৈরী করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এই খুদে বিজ্ঞানী। মূলত বজ্রপাতের হাত থেকে খোলা আকাশের নিচে কাজ করা কৃষকেরা যাতে রক্ষা পায় সেই উদ্দেশ্যেই এই আবিষ্কার।
পূর্ব মেদিনপুর নিবাসী ষষ্ঠ শ্রেণীর শ্রেয়কের বজ্রপাত রােধক এই ছাতা বা থান্ডারস্টিক ফর ফার্মার্স মডেল (Thunder stick for farmers model) প্রশংসিত হয়েছে রাজ্য শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসের কাছেও। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর থানার এলাকার বাসিন্দা সে। ওই অঞ্চলেরই বাহাদুরপুর দেশপ্রাণ শিক্ষা নিকেতনের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র শ্ৰেয়ক পণ্ডা। সম্প্রতি ভার্চুয়ালি আয়োজিত হওয়া জাতীয় শিশুবিজ্ঞান কংগ্রেস ২০২০ তে সে সাফল্য এনেছে রাজ্যস্তরে। কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশন্যাল কাউন্সিল ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনােলজির (Indian National Council for Science and Technology) সাহায্যে এবং রাজ্য সায়েন্স কমিউনিকেটর ফোরামের আয়োজনে শিশুবিজ্ঞান কংগ্রেস ২০২০ – র প্রতিযােগিতা আয়োজিত হয় ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি অনলাইনে। জেলাস্তরে এই প্রতিযােগিতায় প্রজেক্ট হিসাবে থান্ডারস্টিক ফর ফার্মার্স মডেল তৈরি করে ওই ছাত্র। তার প্রজেক্ট প্রধান গাইড ছিলেন ছিলেন দেশপ্রাণ শিক্ষা নিকেতনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিতাই চরণ পাত্র।
বজ্রপাত প্রতিরোধী এই ছাতা বানাতে তার লেগেছে, একটি নতুন ছাতা, 4mm তামার তার, একটি পিভিসি পাইপ, 4mm একটি রড। এগুলি ব্যাবহার করেই আর্থিং যুক্ত ১০ ফুট উচ্চতার ছাতার মডেল বানিয়েছে শ্রেয়ক। শ্রেয়কের বানানো ফোল্ডিং এই স্টিক নিজেদের সুরক্ষার কারণে বর্ষাকালে কৃষকরা কাজের সময় সাথে নিয়ে যেতে পারবেন মাঠে। আকাশে মেঘ করলে বা বজ্রপাতের সম্ভাবনা থাকলে নিজে যেখানে দাঁড়িয়ে কাজ করবে, তার থেকে অন্তত ২০ ফুট দূরে মাঠের উপর এই ছাতাটি পুঁতে দাঁড় করিয়ে দিতে হবে। বজ্রপাতের উচ্চ বিভব যুক্ত তড়িৎ ওই খােলা মাঠে মানুষের থেকে বেশি লম্বা হওয়ার জন্য সূচালো প্রান্তের ওই স্টিকে ধরা পড়বে এবং মাটিতে বাহিত হয়ে যাবে। এর ফলে বজ্রাঘাতের থেকে রক্ষা পাবে কৃষক।