প্রেমিক তার প্রেমিকার চোখ আটকে দিল আঠা দিয়ে। চোখের পাতা আঠায় আটকে যাওয়ায় প্রেমিকার চোখের হাল এমনই হল যে চিকিৎসকরাও ভয়ভীত যে চোখ দিয়ে আদৌ আর কখনো মেলে তাকানো যাবে কিনা! ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাজিলের এক শহর ক্যাচিয়ারো দে ইটাপরিয়ামে। কিন্তু এমন কাজ কেন করতে গেল প্রেমিক। কারণ জানলে অবাক হতে হয় বইকি।
ঘটনায় শিকার যে মহিলা সেই ৫৫ বছর বয়সী রেজিনা অর্নামা চোখের এক কষ্টদায়ক রোগ গ্লুকোমার শিকার। এই যন্ত্রণা উপশমে তাকে প্রতিদিন চোখে ড্রপ দিতে হয়। তিনি তার চোখের সমস্যা দূরীকরণের ড্রপগুলো তার বাড়ির ফ্রিজেই সংরক্ষণ করেন।
জানা গেছে, যে যে ফ্রিজে রেজিনা চোখের ড্রপ রেখেছিল রেজিনার প্রেমিক সেই একই ফ্রিজে রেখেছিল একটি গ্লু বা আঠার টিউব। যেখানে রেজিনার চোখের ড্রপ রাখা ছিল সেইখানেই ছিল তার। রাতে রেজিনা চোখে গ্লুকোমার কারণে হঠাৎই ব্যথা অনুভব করে, তখন সে তার প্রেমিকের কাছে চোখের ড্রপ লাগিয়ে দিতে বলে। তাড়াহুড়োয় রেজিনার প্রেমিক ফ্রিজে রাখা আঠার পাত্র এবং চোখের ড্রপ পার্থক্য করতে পারেন নি এবং ভূলবশতই চোখের ড্রপের পরিবর্তে রেজিনার চোখে আঠা লাগিয়ে দিলেন।
বিষাক্ত কেমিক্যাল দেওয়া আঠা চোখে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেজিনা যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করে। তার চোখের পাতা আঠায় আটকে যায়। তখনি প্রেমিক তার করা ভুল বুঝতে পারে। ঘটনাক্রমে, আঠা আর চোখের ড্রপ ফ্রিজে একই প্লাস্টিকের কনটেইনারে রাখা ছিল। তাদের নাম হঠাৎ দেখলে কিছুটা মিল লাগে এবং উভয়েরই নামের শুরু সি’ অক্ষর দিয়ে। ঘটনার সময় তার প্রেমিক চশমা পরেননি।
রেজিনা বলেন, ‘ আঠার ড্রপ আমার চোখে পড়ার পরই মনে হচ্ছিল যেন আমার চোখ জ্বলে যাচ্ছে। যন্ত্রনায় মনে হচ্ছিল আমার চোখ ফেটে যাবে।’ সঙ্গে সঙ্গে রেজিনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে চক্ষু পরীক্ষকরা চিকিত্সা করেন। রেজিনা বলে যে সে যন্ত্রনায় সারা রাত ভীষণ কান্নাকাটি করতে থাকে।
চক্ষু বিশেষজ্ঞ রেজিনা চোখের পরিস্থিতি নিয়ে জানান, ‘যখন কোনো রাসায়নিক মেশানো গ্লু বা অ্যালকোহলযুক্ত জেলের মতো জিনিস চোখে লাগানো হয়, তখন চোখে তীব্র জ্বালা যন্ত্রণা অনুভব হয় এবং এটি কর্নিয়া এবং কনজাঙ্কটিভাকের উপরেও প্রভাব বিস্তার করতে পারে। চোখের ভিতরে আঠা লেগে থাকা আঠা ভেতরে একটি আস্তরণ তৈরি করে যা চোখের ভেতরে একটি বড় ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। যদিও চিকিৎসকরা আঠা সরানোর পর এখন রেজিনার চোখ খুলতে পারছে, তবে তার চোখের কতটা ক্ষতি হয়ে গেছে এই আঠার প্রভাবে এবং কতদিন এই প্রভাব তা স্পষ্ট নয়।’