এয়ার হোস্টেস কে পছন্দ হয়ে গিয়েছিল। তাই খোলামকুচির মতন টাকা উড়িয়ে এক বছরে পঞ্চাশ বার বিজনেস ক্লাসে যাত্রা করেছিল। শুধু তাই নয় ইচ্ছা মতন দিত মোটা টাকার টিপস্। এই ভাবেই সেই এয়ার হোস্টেস কেও বিয়ে করে নিয়েছিল। কিন্তু ইচ্ছা মতন টাকা উড়িয়ে চলা সেই চোলাই মদের চোরাকারবারি সমর ঘোষ শেষমেষ ধরা পড়ল পুলিশের হাতে।শুধু তাই নয় কান ধরে উঠবোসও করল পুলিশের সামনে
সমর, যাকে বিহারে মদ নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে নকল মদের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী বলা হয়, তিনি সবজির ব্যবসা ছেড়ে মদ বিক্রিতে এতটাই পারদর্শী হয়েছিলেন যে তিনি মাত্র অল্প সময়ের মধ্যেই কোটিপতি হয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, সমর ঘোষ এর প্রকৃতি অদ্ভুত ধরনের ছিল, সে সব সময় টাকা উড়িয়ে রাজার মতন বাঁচা পছন্দ করত। যে সবসময় তার সহকর্মীদের পার্টি দিত। একই ধরনের পার্টি চলাকালীন পুলিশ তাকে আটক করে।
গত বছরের 16 অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার মদ নিষেধাজ্ঞা আইন আরও কঠোরভাবে কার্যকর করার জন্য একটি বৈঠক করেছিলেন। এরপর অবৈধ মদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে লাগাতার আইন কড়া হচ্ছে। এরই কারণে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা মুর্শিদ ও সমর ঘোষকে দুই আলাদা দিনে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দুজনকেই বিহারের পূর্ণিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিহারে মদ সরবরাহকারী মাফিয়াদের মধ্যে এই দুটি নামই শীর্ষ তালিকায় রয়েছে।
সমর বাংলার উত্তর দিনাজপুর জেলার রাথার দানিগাছি হাউসের বাসিন্দা। বিহারে তাঁর ব্যবসা সুপল জেলা পর্যন্ত পূর্ণিয়া সদর থানা, কাটিহার জেলার কাদওয়া এবং পোথিয়া থানা পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে। চোলাই মদ চোরাকারবারী সমর ঘোষের লাইফস্টাইল কোনো নেতা , অভিনেতার চেয়ে কম কিছু ছিল না। এ কারণেই মদ চোরাচালানে কোটি কোটি টাকা আয় করার পর তিনি তার কালো টাকা জলের মতো উড়িয়েছে। পুলিশের হেফাজতে আসার পর জানা গিয়েছে, মদ পাচারকারী সমর ঘোষ মাত্র দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। মদ পাচার করে প্রচুর টাকা কামিয়েছেন। এত টাকা যে শুধু একজন এয়ার হোস্টেস কে দেখবেন বলে বছরে ৫০ বার শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে বিজনেস ক্লাসে দিল্লি ভ্রমণ করেন।
পরে, সমর ঘোষ ইউপির বুলন্দশহরের বাসিন্দা সোনিয়া নামে সেই এয়ার হোস্টেসকে বিয়ে করেন। জানা আছে যে, সোনিয়া কে সমর নিজের টাকা ওড়ানোর ক্ষমতা দেখিয়ে এমনভাবে প্রভাবিত করেছিল যে তিনি সমরকে বিয়ে করতে প্রস্তুত হয়ে যান। এমনকি ওই এয়ার হস্টেসের বান্ধবীদেরও সময় প্রচুর টাকা খরচ করে পার্টি দিয়েছিলেন।
কিন্তু এই সবের বিন্দুবিসর্গ টের পেতে দেননি নিজের পরিবারকে। সমর ঘোষের বাবা সুকুমার ঘোষ বাংলার ইসলামপুরে জলসম্পদ বিভাগে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। মদ চোরাচালান ব্যবসার কথা তার পরিবারের সদস্যদেরও জানতে দেননি সমর। পরিবারের সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করতেন। তিনি তার এয়ার হোস্টেস মহিলা বন্ধুর বন্ধুদেরও বহুবার পার্টি দিয়েছিলেন এবং এই পার্টিতেও লক্ষ লক্ষ টাকা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সমর ঘোষকে গ্রেফতারের সময় একই ধরনের পার্টিতে তিনি মত্ত ছিলেন এবং ফিল্মি স্টাইলে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। পুলিশের সামনে কান ধরে সমর ঘোষ বলেন, এখন আর মদের ব্যবসা করবেন না। বিহার পুলিশের দাবি, এই মদ মাফিয়াকে গ্রেফতার করা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।