বাংলাদেশে (Bangladesh) করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এখন প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে দৈনিক সংক্রমনের নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। অথএব বোঝাই যাচ্ছে আছড়ে পড়েছে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। নিজের চরিত্র পালটে আরও ভয়াবহ হয়েছে ওই মারণ ভাইরাস। ভাইরাসের হানায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সেই দেশে আক্রান্তের সংখ্যা। এহেন মারাত্মক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়িয়ে আশঙ্কার কথা শোনাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসন। সরকার সূত্রে এক বিবৃতি তে বলা হয়েছে যদি এভাবেই সংক্রমণ বাড়তে থাকে তাহলে হাসপাতালে রোগীদের জায়গা দেওয়া সম্ভব হবে না।
কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেও বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি আনা যায় নি নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে এক একদিনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন ১৫ হাজারেরও বেশি মানু্ষ। মৃত্যুর সংখ্যাও নেহাতই কম থাকছে না প্রতিদিন। পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক রূপ নিয়ে নিয়েছে। এমন ভয়াবহ অবস্থায় কড়া বিধিনিষেধ জারির পথেই হাঁটল বাংলাদেশ সরকার।
এদিকে বাংলাদেশে যথেষ্ট ধাক্কা খেয়েছে করোনা টিকা দানের কর্মসূচি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৭ তারিখ থেকে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার কর্মসূচি, কিন্তু ছয় মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র দেশের পৌনে এক কোটি মানুষকে প্রথম ডোজের করোনা টিকা দেয়া সম্ভব হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজের টিকা সম্পূর্ন করেছেন মাত্র ৪৩ লাখ মানুষ, যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র আড়াই শতাংশ। অথচ টিকাকরনই যে এই ভাইরাসের ঢেউ কে প্রতিহত করার একমাত্র উপায় তা বার বার জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
গত ১ জুলাই থেকে করোনা সংক্রমনের ঢেউ কে ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল সমস্ত বাংলাদেশ জুড়ে। কিন্তু ঈদ আল আধা উপলক্ষে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন বিধিনিষেধে কিছুটা শিথিলতা আনা হয়। কিন্তু পরিস্থিতি ঘোরালো হয়। এরপর ২৩ জুলাই থেকে আবারও সংক্রমনের ঢেউয়ের ধাক্কায় কঠোর বিধি নিষেধ চালু করতে হয়েছে বাংলাদেশ জুড়ে। করোনা সংক্রমণের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার ফলে এই বিধি নিষেধ জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। বর্তমানে ওই দেশের পরিস্থিতি যা, তাতে করোনা পরিস্থিতি কবে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসবে, তার কোনও পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে না। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে বাঙলাদেশে করোনায় আক্রান্তের হার ২৯.৮২ শতাংশ। একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের। এর থেকেই স্পষ্ট, আগামীদিনে আরও দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির দিকেই যাচ্ছে বাংলাদেশ।