বিহারের রাজধানী পাটনা থেকে এক চমকপ্রদ ঘটনা সামনে এসেছে। পাটনা পুলিশ এমনই এক গ্যাংকে ফাঁস করেছে, যার মূল পান্ডারা বি.টেক. আর বিবিএর ছাত্র। অভিযুক্ত যুবকেরা লুট হওয়া জিনিসপত্র রাখার জন্য একটি রুম ভাড়াও নিয়েছিল। পুলিশ প্রচুর খানা তল্লাশির পর এই হাইপ্রোফাইল গ্যাংকে ফাঁস করেছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পিস্তল, ম্যাগাজিন ও তাজা কার্তুজও উদ্ধার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্তের বাবা PWD-এর অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী এবং তার ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং তাকে গুরুগ্রামের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু ছেলের কীর্তিতে বাবার সন্মান মাটিতে মিশে গেছে।
তথ্য অনুসারে, পাটনা পুলিশ ডাকাতদের একটি দলকে সম্প্রতি ধরেছে যার সদস্যরা বি.টেক এবং বিবিএর ছাত্র। এই চক্রটি লুটপাট করা জিনিস রাখার জন্য ভাড়ায় একটি রুমও নিয়েছিল, তবে পুলিশ অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ও সচিবালয়ের কর্মচারীর ছেলেসহ তাদের গ্যাংয়ের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার করে। এই চক্রটি ৪ দিন আগে ৩টি ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছিল। একজনকে গুলিও করা হয়েছে, যা আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। পাটনা পুলিশ প্যাটেল নগরের মোহিত কুমার এবং পোস্ট অফিসের কাছে বাস করা সৌরভ কুমারকে গ্রেপ্তার করেছে, তার দুই সহযোগী গৌতম কুমার এবং মিঠাপুরের সত্যেন্দ্র কুমারের সাথে, যারা শাস্ত্রী নগর এলাকায় ডাকাতির ঘটনাটি ঘটিয়েছিল। তাদের কাছ থেকে পিস্তল, ম্যাগাজিন ও তাজা কার্তুজসহ অনেক জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে।
বান্ধবীর জন্য হতে হয়েছিল ডাকাত:
গ্রেফতারকৃত অপরাধীদের মধ্যে মোহিত কুমার গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি কলেজের বি.টেকের ছাত্র। আরেকজন, সৌরভ মূলত লক্ষীসরাই জেলার বাসিন্দা এবং পাটনার একটি বেসরকারি কলেজ থেকে বিবিএ করছেন। সৌরভ পাটনায় থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। মোহিত এবং সৌরভের টাকার প্রয়োজন পরে এবং তারা লুটপাট শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ পুরো বিষয়টি বিজ্ঞানসম্মতভাবে তদন্ত করে সবাইকে গ্রেফতার করেছে। জেরায় মূল অপরাধী বলেছে, প্রেমিকার খরচ বহন করতে ধীরে ধীরে অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন এই যুবক।
বাবার স্বপ্ন শেষ:
ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র মোহিতের বাবা গঙ্গাধর দত্ত PWD-এর অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী। ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার বানানোর জন্য তিনি গুরুগ্রামের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে B.Tech-এ ভর্তি করিয়েছিলেন। মোহিত করোনার সময় পাটনায় এসে এখানে ভুল সঙ্গে পড়ে যান। সৌরভের বাবা সুরেন্দ্র দাস সচিবালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। পাটনায় বহু ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে এই চক্র। ১৮ই আগস্ট, বাসাওয়ান পার্কের কাছে খাটাল অপারেটরের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনতাই করে তারা। এরপর পুনাইচকে এক যুবকের মোবাইল ছিনতাইয়ের পর তাকে পায়ে গুলি করে। এরপর ১৮ আগস্ট পিস্তলের ভয় দেখিয়ে নবীন সিনহা পার্কের কাছে এক যুবকের মোবাইল ফোন ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় দুজনে। এসব ছিনতাইয়ের ঘটনার পর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই বেরিয়ে আসে পুরো ঘটনা।