দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় একেবারে নাস্তানাবুদ হয়ে গেছিল দেশ। দরজায় কড়া নাড়ছে তৃতীয় ঢেউও। কিন্তু হুশ নেই সাধারন মানুষের। অতিমারী আবহে কলকাতার পর শিলিগুড়িতেও (Siliguri) করোনাবিধি লঙ্ঘন করে রাতভর হোটেলে পার্টি! করোনা বিদায় না নিলেও তার মধ্যেই চলছে দল বেঁধে পার্টি , ফুর্তি , হই হুল্লোড়, নাচ গান। অভিযোগ পেতেই সেখানকার পুলিশ, পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে মোট ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোপন অভিযান চালিয়ে। ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে মহামারী আইনে।
শুক্রবার রাত সাড়ে নাগাদ শিলিগুড়িতে একটি হোটেলে পার্টি (Party) হচ্ছে বলে গোপন সূত্রে খবর পায় ভক্তিনগর থানার পুলিশ। পুলিশকর্মীরা তড়িঘড়ি ওই হোটেলে হানা দেয়। ভিতরে ঢুকে তাঁরা কার্যত তাজ্জব হয়ে যান পার্টির আবহ দেখে। দেখেন বক্স সশব্দে বাজছে। উদ্দাম নাচ, গান চলছে। অনেকেই কোভিডবিধিকে (Covid Norm) কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মদ্যপানও করছেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ৪১ জনকে পুলিশ কর্মীরা হাতেনাতে পাকড়াও করেন। ২৫ জন পুরুষ এবং ১৫ জন মহিলাও রয়েছেন তাদের মধ্যে। তাদের আদালতে তোলা হবে শনিবার। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে মহামারী উলঙ্ঘন আইনে।
পরপর দু’টি অভিজাত হোটেলে পার্টির আয়োজন করতে দেখা যায় কলকাতায়। পার্কস্ট্রিটের (Park Street) অভিজাত হোটেলে পার্টির আয়োজন হয় চলতি মাসের শুরুর দিকেই। সেই সব জায়গায় আয়োজকদের সঙ্গে বচসা এবং ধস্তাধস্তিও হয় পুলিশ হানা দিলে। সেই ঘটনা কেন্দ্র করেই ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় ঘটনাস্থল থেকে। এই ঘটনায় তদন্তকারী পুলিশ ইতিমধ্যেই হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। এহেন পার্টিতে মদ সরবরাহ করা হল কীভাবে, কোথা থেকে আবগারি বিভাগও সে সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যের খোঁজ শুরু করেছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মিন্টো পার্কের (Minto Park) অভিজাত হোটেলে জন্মদিনের পার্টি আয়োজনের ঘটনা সামনে এসেছে। আবগারি দপ্তর ফের খবর পাওয়া মাত্রই হানা দেয়। তবে অভিযোগ উঠেছে ওই হোটেলের সমস্ত আলো নিভিয়ে আধিকারিকদের কার্যত হেনস্তা করার।
যদিও এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি এই ঘটনায়। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কলকাতার পর শিলিগুড়িতেই। এখনও করোনাবিধি জারি রয়েছে রাজ্যে। ICMR জানিয়েছে তৃতীয় ঢেউ ধেয়ে আসছে করোনা ভাইরাসের। তা সত্ত্বেও সকলকে কিছু মানুষের এমন বেপরোয়া গতিবিধিই ভাবাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে দল বেঁধে , কোভিড বিধি না মানার জেরে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আরও কড়া হাতে প্রশাসনের বিষয়টি মোকাবিলা করা দরকার। না হলে বড় খেসারত দিতে হতে পারে আমাদের সামান্য অসাবধানতার জন্য।