তালিবানের (Taliban) অত্যাচার থেকে গর্ভস্থ সন্তানকে বাঁচাতে গর্ভবতী অবস্থায় বাকি হাজার হাজার শরণার্থীর মত আফগানিস্তান (Afghanistan) ছাড়েন এক মহিলা। এদিকে তাঁর প্রসবের দিনক্ষণও আসন্ন। কিন্তু বর্তমান আফগানিস্তানে যা পরিস্থিতি তাতে যে কোনো মূল্যে দেশ ছাড়তে তৎপর বহু সাধারণ নাগরিক। তালিবান রক্তচক্ষু এড়িয়ে আমেরিকাগামী প্লেনে উঠে বসেন ওই গর্ভবতী মহিলাও। কিন্তু মাঝ আকাশেই শুরু হয় তীব্র প্রসব বেদনা। আফগান শরণার্থী মহিলার কন্যা সন্তান শেষে প্রসব হল জার্মানির রামস্টেইন এয়ার বেসের কার্গো হোল্ডে বিমান অবতরণের পর।
রবিবার একটি টুইট বার্তায় এই খবর প্রকাশ্যে এসেছে। টুইটটি করেছে এয়ার মবিলিটি কমান্ড (Air Mobility Command)। জানা গিয়েছে রবিবার তালিবানের ভয়ে দেশ ছাড়তে চাওয়া আফগান নাগরিকদের নিয়ে একটি মার্কিন বায়ু সেনার বিমান এয়ার ফোর্স সি-১৭ জার্মানির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। তাতে সওয়ারি ছিলেন ওই আফগান শরণার্থী মহিলাও। বিমান যখন মাটি থেকে প্রায় ৮ হাজার ৫৩৪ মিটার উপরে তখনই হঠাৎ প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় ওই তরুণীর। এমন পরিস্থিতিতে ঘাবড়ে যান ওই তরুণী।
এতটা উপরে বায়ুর চাপ কম থাকায় কষ্ট বাড়তে থাকে আসন্ন প্রসবা তরুণী। পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে পড়লে বিমানের কমান্ডার সিদ্ধান্ত নেন বিমানকে দ্রুত নিচের দিকে নামাতে হবে। তিনি বিমানের উচ্চতা কমিয়ে আনেন যাতে প্লেনের কেবিনের ভেতরে বাতাসের চাপ বাড়িয়ে ওই আসন্ন প্রসূতির জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়। এরপর বিমানটি জার্মানিতে পৌঁছলে মার্কিন সেনার মেডিক্যাল টিমের সাহায্যে জন্ম নেয় শিশুটি। পরে ওই আফগান মহিলা ও তাঁর সন্তানকে সেখানে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গেছে মা এবং কন্যা সন্তান দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন।
তবে মার্কিন বিমানে মাঝ আকাশে জন্ম নেয়া ঐ শিশুর নাগরিকত্ব কী হবে তা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। অনেকেই দাবী তুলেছেন যেহেতু সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুটি মার্কিন পতাকাবাহী এবং যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ জাহাজের ভেতর জন্মগ্রহণ করেছে সেজন্যে তার মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত। কেউ কেউ আবার বলছেন, যেহেতু বিমানটি জার্মানিতে নামার পর শিশুটির জন্ম হয়েছে, তাই জার্মান নাগরিকত্বই তার প্রাপ্য। কি হবে সদ্য ভূমিষ্ঠ শরণার্থী শিশুটির সাথে তা অবশ্য সময় বলবে।