রক্তে শুদ্ধতা বজায় রাখতে নিজের রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়ের সাথে যৌন সম্পর্কে বাধ্য করা হত। আমেরিকার উটায় গত সপ্তাহে বিস্ফোরক অভিযোগ করে ১০ জন মহিলা একটি মামলা দায়ের করেছেন। তাঁরা ‘কিংস্টন গ্রুপ’ নামে এক বহুগামী (একাধিক মহিলা/পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করে যারা) গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন। গুরুতর অভিযোগ করেছেন তাঁরা পল এলডন কিংস্টন গোষ্ঠীর নেতা এবং আরও ২১ জন সদস্যের বিরুদ্ধে। যৌন নির্যাতন, শিশু নির্যাতন, শিশু পাচারের মতো মারাত্মক অভিযোগ এর মধ্যে রয়েছে। অভিযোগকারী ওই মহিলারা আরও জানিয়েছেন যে বাল্য বিবাহেও তাদের জোর করা হত। তাঁদের নিয়মিত ধর্ষণ করতেন গোষ্ঠীর সদস্যরা এবং তাঁদেরকে শিশু শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হত।
‘অর্ডার’ নামেও পরিচিত ‘কিংস্টন গ্রুপ’। ওই মহিলাদের দ্বারা করা মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, “মেয়েদের জন্ম থেকেই অর্ডারে শেখানো হয়, তাদের জীবনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল পুরুষদের বাধ্য হওয়া, কোনও প্রশ্ন না করে স্বামী যা বলবে তা করা এবং যত বেশি সম্ভব সন্তান ধারণ করা।” আরও বলা হয়েছে, চূড়ান্ত বর্ণবিদ্বেষী গোষ্ঠীটি। শ্বেতাঙ্গদের রক্তই একমাত্র বিশুদ্ধ রক্ত বলে তারা মনে করে। পৃথিবীতে চূড়ান্ত বিপদের দিনেও তারাই নাকি শুধু বেছে থাকবেন। কিংস্টন পরিবারের রক্ত যাতে বিশুদ্ধ থাকে, এই গোষ্ঠীর প্রাথমিক লক্ষ্য সেটাই। তারা তুতো ভাই-বোন এবং অন্যান্য নিকটাত্মীয়দের একে অপরকে এর জন্য বিয়ে করতে বাধ্য করে।
আরও বলা হয়েছে এই চাঞ্চল্যকর মামলার আবেদনে , “মহিলাদের স্বামীর যৌন ইচ্ছা পূরণ করতে তাদের বাধ্য করা অর্ডারে একটি অত্যন্ত সাধারণ বিষয়। তাদের কাছে মহিলাদের ইচ্ছার কোনও গুরুত্ব নেই। এই সংক্রান্ত নিউইয়র্ক পোস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোগকারী ১০ মহিলার মধ্যে ৫ জন দাবি করেছেন, তাঁদের বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছিল নাবালিকা হিসেবে এবং তাঁদের নিয়মিত ধর্ষণ করত তাঁদের স্বামীরা। আমান্ডা রাই গ্রান্ট এঁদেরই একজন। তিনি জানিয়েছেন, যখন ছোট ছিলেন তিনি তখন দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তাঁর উপর তাঁর সৎ ভাইরা যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল।
শুধু মহিলারাই নন, পুরষরাও এই বিকৃত পরিবারের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এক ব্যক্তি এরকমই দাবি করেছেন, তিনি ওই গোষ্ঠী ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন ১৬-১৭ বছর বয়সে। তিনি গোষ্ঠীর নেতাদের জানিয়েছিলেন, তিনি সমকামী। কিন্তু, তিনি রেহাই পাননি। বেশ কয়েকজনকে পাঠিয়েছিল তাঁর খোঁজে কিংস্টন পরিবার। তাঁকে খুঁজে বের করে তারা মারধর করে এবং অন্তত তিনজন তাঁকে পায়ু-ধর্ষণ করেছিল।
অবশ্য এখনও পর্যন্ত কিংস্টন পরিবারের পক্ষ থেকে যাবতীয় অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, অসার এবং ভিত্তিহীন অধিকাংশ অভিযোগই। এই সব অভিযোগ আদালতে ধোপে টিকবে না।