অনেকের জীবনের পথ কাঁটাময় হয়। পরিবার থেকে শুরু করে বাইরের জীবনে এমন অনেক পরিস্থিতি আসে যেখানে তাদের নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। একেই বলে জীবন যুদ্ধ। অনেক মানুষই প্রতিনিয়ত ঠোকর খেতে খেতে হেরে যান বা হাল ছেড়ে দেন। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন যারা কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন এবং কোনো কিছুতেই হার মানেননা। আর তাদের এই জেদ তাদের জীবনে এনে দেয় সফলতা। এমন মানুষ সব রকমের বাধ্যবাধকতা এবং সমস্যা পার করেও নিজেদের সাফল্যের পথ ঠিকই তৈরি করে নেন।
এমনই এক জন মানুষ হচ্ছেন আসিফ আহমেদ। জীবনে ছোটো থেকেই নানা বাঁধা বিপত্তি পেরোতে হয়েছে আসিফকে।
আসিফ আহমেদ বসবাস করতেন চেন্নাই এর পল্লবরামে থাকেন। তিনি এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি পরিবারে প্রত্যক্ষ করেছেন দারিদ্রের সংসার। একটা সময় তার বাবার চাকরি চলে যাওয়ার পরে তাদের পরিবারের অবস্থা আরো দুর্দশাগ্রস্ত হতে থাকে। ছোটবেলা থেকে পরিবারে আর্থিক সমস্যার কারণে তাকে মাঝপথেই পড়াশোনা ছেড়ে পরিবারের দায়িত্ত্ব কাঁধে তুলে নিতে হয়েছিল। বাইরে কাজ খুঁজতে হয়েছিল পরিবারের আর্থিক অনটনের পরিস্থিতি সামাল দিতে। কিন্তু তিনি কখনোই হাল ছেড়ে দেননি।
যখন তার বয়স মাত্র ১২ বছর তখন তিনি সংবাদপত্র বিলি করতেন বই বিক্রি করতেন। এরপর যখন তার বয়স হল ১৪ বছর তখন তিনি চামড়ার জুতার ব্যবসা শুরু করেন। তার এই ব্যবসা থেকে তিনি প্রায় লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করেছিলেন। তবে আবারো নেমে আসে সমস্যা। হঠাৎই তার এই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। আবারও কর্মহীন হয়ে পড়েন আসিফ। কিন্তু আসিফ নতুন কিছু করার কথা ভাবতে থাকে। আসিফের ছোটবেলা থেকে রান্নার প্রতি আগ্রহ ছিল। তিনি বেশ ভালো বিরিয়ানি বানাতে পারতেন।
তিনি নানা বিয়েবাড়িতে এবং স্থানীয় অনুষ্ঠানে বিরিয়ানি বানানো শুরু করেন। তবে সেই ভাবে লাভ হচ্ছিল না। অবশেষে তিনি স্বাধীন ব্যাবসার কথা ভাবেন। তার নিজের জমানো ৪০০০ টাকা দিয়ে তিনি তার বাড়ির কাছে একটি বিরিয়ানির স্টল দেন। তার বানানো বিরিয়ানি বেশ বিক্রী হতে শুরু করে। তার স্টলের নামডাক হয়।
তিনি বাড়িতে বিরিয়ানি তৈরি করতেন এবং স্টলে বিক্রি করতে যেতেন। তার বিরিয়ানির বিক্রি বাড়ার সাথে সাথে তার উপার্জনও বাড়তে থাকে। ২০০২ সালে তিনি তিনি স্টল ছেড়ে একটি বিরিয়ানির দোকান দেন যার নাম রাখেন ‘আসিফ বিরিয়ানি’। সেই থেকে শুরু। সেই ব্যাবসা বাড়তে বাড়তে আজ অনেকগুলি বিরিয়ানির দোকান তার। ব্যাবসার টার্ন অভার কোটি টাকার উপরে। পরিশ্রম আর অধ্যবসায় থাকলে জীবনে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। আসিফ তারই উদাহরণ