বিরিয়ানী পছন্দ করেন না এমন বাঙালি বোধহয় নেই। এপার বাংলা হোক কি ওপার বাংলা। বিরিয়ানী প্রিয় মানুষের অভাব নেই। এর সাথেই পাল্লা দিয়ে গড়ে উঠছে প্রচুর সংখ্যক বিরিয়ানির দোকান। এগুলির মধ্যে কোনটিতে কি ধরনের চাল, মশলা বা মাংস ব্যাবহার হচ্ছে বা খাবারের গুণমানই বা কেমন তাই নিয়ে সঠিক নজরদারির অভাবে তাই নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। এমনই এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এবারে ওঠে এল ভীষণ জনপ্রিয় বাংলাদেশের বিরিয়ানী আউটলেট হাজি বিরিয়ানি হাউজ থেকে
পুরো বাংলাদেশ (Bangladesh) জুড়েই হাজির বিরিয়ানির ভীষণ জনপ্রিয়তা। আর সেই জনপ্রিয়তার সুযোগ নিয়েই বিরিয়ানী প্রস্তুত করতে গুনমানের কোনো খেয়ালই রাখেননি প্রস্তুতকারকরা। ঢাকা শহরের প্রায় দেড়শো কিলোমিটার পূর্বে বাংলাদেশের নোয়াখালির জেলার সোনাইমুড়ীতে হাজি বিরিয়ানি হাউজ থেকে একশ কেজি গন্ডারের পচা মাংস বাজেয়াপ্ত করেছে বাংলাদেশের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই পচা মাংস ব্যাবহার করেই বিরিয়ানী বানাচ্ছিল হাজি বিরিয়ানি হাউস। তাদের এই কুকীর্তি পর্দা ফাঁস হওয়ার পর বিরিয়ানির সংস্থাটিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে ভ্রাম্যমান আদালতের তরফে।
তবে শুধু মোটা অংকের টাকা জরিমানাই নয় ওই বিরিয়ানি প্রস্তুতকারক সংস্থা হাজি বিরিয়ানি হাউজকে ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আপাতত সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।
নোয়াখালী জেলার হাজি বিরিয়ানীর স্বাদ নিত এমন মানুষেরা জানায়, এত সুন্দর স্বাদের কারণেই বিরিয়ানী প্রেমীদের মধ্যে ভীষণ জনপ্রিয় এই হাজি বিরিয়ানি হাউজ। কিন্তু সুন্দর বিরিয়ানী প্রস্তুত করার আড়ালে যে গ্রাহকদের গণ্ডারের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পচা মাংস খাওয়াচ্ছিল প্রস্তুতকারকরা তা বোঝা যায়নি। গোপন সূত্রে মারফত এই বিষয়ে জানতে পেয়ে সোনাইমুড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলুর রহমান ওই দোকানে অভিযান চালান। তাতে ৭০ কেজি পচা কাঁচা মাংস ও রান্না করা ৩০ কেজি গন্ডারের মাংস বাজেয়াপ্ত করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের (Mobile Court) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলুর রহমান এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘সোনাইমুড়ি বাজারে অবস্থিত হাজি বিরিয়ানি হাউজ অনেকদিন ধরেই দোকানের খরিদ্দারদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে ১০০ কেজি গণ্ডারের পচা মাংস কোর্ট বাজেয়াপ্ত করেছে। বিরিয়ানী প্রস্তুতকারক সংস্থাটিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” এতদিন ধরে যারা হাজির বিরিয়ানির ভক্ত ছিলেন বা এই দোকানের বিরিয়ানী খেতেন, তাঁদের এখন চিন্তায় ঘুম উড়েছে। শরীরের কতখানি ক্ষতি হয়ে গেল, এই ভেবেই চিন্তায় পড়েছেন তারা। বহু মানুষই নামী বিরিয়ানি প্রস্তুতকারী সংস্থার এহেন কাজের কারণে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযানে যে দোকানের পর্দা ফাঁস হল আর জনগন অনেক বড় ক্ষতির হাত থেকে বাঁচলেন, তা মনে করছেন সকলে।