প্রত্যেকের দুর্গাপুজোর জন্য বছরভর অপেক্ষা থাকে। তবে আপামর বাঙালি যে দিনটার জন্য মুখিয়ে থাকেন আজ সেই মহাষ্টমী। শাস্ত্রমতে দুর্গাপুজোর অষ্টমীর তিথি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হিন্দু ধর্মানুসারে এই তিথিতে বেশ কিছু উপাচার করা হয় যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। সপ্তমীতে অধিবাস, নবপত্রিকা স্নান শেষে দুর্গাপূজার মূল অনুষ্ঠানটির প্রথাগত সূচনা হয়। এরপর মহাঅষ্টমী তিথিতে দেবীকে কুমারী ও চামুন্ডা রূপে পুজো করা হয়ে থাকে।
দেবী পুরাণে কুমারী পুজোর সুষ্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। শাস্ত্র অনুসারে সাধারণত এক বছর থেকে ১৬ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা কুমারীকে পুজোর উল্লেখ রয়েছে। ব্রাহ্মণ অবিবাহিত কন্যা অথবা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কন্যাকেও পুজো করার বিধান রয়েছে। বয়স ভেদে কুমারীর নাম হয় ভিন্ন। শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন, শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর প্রকাশ। কুমারী পুজোর মাধ্যমে নারী জাতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মাঠে নয় কুমারীকে পুজো করেন। তখন থেকে প্রতি বছর দুর্গাপুজোর অষ্টমী তিথিতে বেলুড় মঠে মাহা ধুমধাম করে এই পুজোর প্রথা চলে আসছে।এরপর অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস- এই পাঁচ উপকরণ দেওয়া হয় ‘কুমারী’ পূজাতে। বয়স অনুযায়ী এদের নাম হয়ে থাকে সন্ধ্যা, সরস্বতী, ত্রিধামূর্তি, কালিকা, সুভগা, উমা, মালিনী, কুব্জিকা, অপরাজিতা, কালসন্দর্ভা, রুদ্রানি, ভৈরবী, মহালক্ষ্মী, পীঠনায়িকা, ক্ষেত্রঞ্জা ও অম্বিকা। এ ১৬টি নামে এরা বয়স অনুযায়ী পূজিত হয়।
যেসব বালিকারা বয়:সন্ধিতে পৌঁছায়নি এদিন সকালে তাদের দেবীরূপে পুজো করা হয়। ১৬টি উপকরণ দিয়ে পূজার সূত্রপাত হয়। শুরুতেই গঙ্গাজল ছিটিয়ে কুমারী মা-কে শুদ্ধ করে তাঁর চরণযুগল ধুয়ে তাঁকে বিশেষ অর্ঘ্য প্রদান করা হয়। অর্ঘ্যের শঙ্খপাত্রকে সাজানো হয় গঙ্গাজল, বেল পাতা, আতপ চাল, চন্দন, পুষ্প ও দূর্বাঘাস দিয়ে। দেবীর গলায় পরানো হয় পুষ্পমাল্য।