রান্নায় পুদিনা পাতার ব্যাবহার তো আছেই, কিন্তু এ ব্যতীত স্বাস্থ্য এবং রূপচর্চায় এই পাতার বহুল ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুদিনা পাতার ব্যবহার ও বহু উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জ্ঞাত নন। শরীরের নানা সমস্যায় তো বটেই এর পাশাপশি রূপচর্চার উপাদান হিসেবেও কদর আছে পুদিনা পাতা ব্যাবহারের। আর সময়ের সাথে সাথে আরো গবেষণা হচ্ছে পুদিনা পাতা বা অন্যান্য ভেষজ উদ্ভিদের গুণাগুণ নিয়ে। যাতে এর উপকারী নানান দিক সামনে উঠে এসেছে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক সেই আশ্চর্য পুদিনা পাতার উপকারিতা কি কি:
হজমে আর পেটের অসুখে উপকারী: ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’, ‘মেন্থল’ আর ‘ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট’ নামক উপাদানে সমৃদ্ধ পুদিনা পাতা। এই সমস্ত উপাদানগুলো খাবার হজমের জন্য জরুরি ‘এনজাইম’ তৈরি করতে সহায়ক। পুদিনা পাতায় মজুত রয়েছে ‘এসেন্সিয়াল অয়েল’ আর শক্তিশালী জীবাণুনাশক ক্ষমতা। পাশাপাশি পুদিনা পাতা পাকস্থলিকে ঠান্ডা রাখে, অ্যাসিড জাতীয় খাবার পরিপাকে সাহায্য করে। ফলে পেটের সমস্যা কমে।
অম্বল ও বদহজমের সমস্যা সারায়: আমাদের দেশের আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলে পুদিনা পাতা হজমশক্তিবর্ধক ও গ্যাস নাশক এবং পাচনতন্ত্র সুস্থ সবল রাখার কারণে এই পাতাকে পাচনতন্ত্রের ধনন্তরীও বলা হয়ে থাকে। যাঁরা বহু দিন ধরে অম্বল এবং বদহজমের সমস্যায় ভুগে চলছেন তারা পুদিনা পাতায় রস করে মধু মিশিয়ে খেলে অন্ত্রের দুবর্লতা আর পেটের সমস্যা সারে।
নিঃশ্বাসের কষ্ট সারায়: নিয়মিত পুদিনা পাতা খেতে পারলে বুকে কফ বসতে পারেনা। তবে কোনো কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়, নতুবা শ্বাসনালীতে দেখা দিতে পারে অস্বস্তি।
মাথা ব্যাথা সারায়: পুদিনা পাতার রস কপালে লাগলে মাথা যন্ত্রণা কমে।
ব্রণ সারাতে: ব্রণ সারাতে ও ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমাতে সতেজ পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগান।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে: নিঃশ্বাস সতেজ করতে আর মুখের গন্ধ দূর করতে পুদিনা পাতা ভীষণ উপকারী। পুদিনা পাতার নির্যাস যুক্ত ‘মাউথওয়াশ’ মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া জীবাণু ধ্বংস করে, সুস্থ রাখে দাঁত ও মাঢ়ি।
কান্সার প্রতিরোধে: অনেক বিজ্ঞানীদের দাবি, পুদিনা পাতায় আছে ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা। পুদিনা পাতার পেরিলেল অ্যালকোহল যা ফাইটো নিউট্রিয়েন্টসের এমন উপাদান দেহে ক্যান্সারের কোষের জন্মতে বাধা প্রদান করে।
মস্তিষ্কের জন্য উপকারী: পুদিনা পাতা প্রতিদিন সেবন করলে মস্তিষ্কের কাজ করার শক্তি বাড়ে, ক্ষিপ্রতা বাড়ে, স্মৃতিশক্তি ভালো হয় এবং অন্যান্য বুদ্ধিভিত্তিক কর্মক্রিয়ারও বিকাশ হয় ।
অলসতা দুর করে দেয় পুদিনা পাতার নির্যাস। একই সঙ্গে ডিহাইড্রেশনের জন্য মস্তিকে যে স্ট্রেস তৈরি হয় তা নিরাময় করে পুদিনা পাতার রস।