সদ্যই বিয়ে করেছেন। ঘরে আনা নববধূ বাসর ঘরে অপেক্ষা করছে, অথচ সেই রাতেই আত্মহত্যা করল স্বামী। এমনই এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ এলাকায়। মৃত যুবকের নাম বাবুল হোসেন, বয়স মাত্র ১৯ বছর।
সদ্য বিবাহিত এই যুবকের এমন ভাবে হঠাৎ আত্মহত্যায় শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার সহ তার বসবাসকারী অঞ্চল চিলাহাটি চরতিস্তাপাড়া এলাকার মানুষজন। এই ঘটনায় এলাকায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। ইতিমধ্যেই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ এবং তা পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। জানা গিয়েছে স্রেফ বাসরঘরে আত্মীয়দের উপস্থিত থাকা নিয়ে বিবাদ ঘিরে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বাবুল।
পরিবার সূত্রে খবর, গত শুক্রবার রাতে বোদার দিনবাজার এলাকার বাসিন্দা সবারউদ্দিনের, সাবিনা ইয়াসমিন নামক কন্যাকে বিয়ে করে ১৯ বছর বয়সী বাবুল হোসেন। বিবাহ সেরে শনিবার বাড়ি ফিরে আসে নববধূ সহ বাবুল। আর সেই রাতেই শুরু হয় পারিবারিক গন্ডগোল। বিবাদের বিষয় বাসর ঘরে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি। বাসর ঘরে নববধূর সঙ্গে সঙ্গে সেখানে থাকতে চান তার পরিবারের আত্মীয়রা। প্রথমে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাবুলের সামান্য মনোমালিন্য হলেও পরে ঠিক হয় সাবিনার সাথে তার বাড়ি থেকে আসা দাদি শামসুন্নাহার, বর বাবুল হোসেন এর জামাইবাবু হুসেন ও তাঁর দুই সন্তান সেদিন রাতে থাকবেন বাসর ঘরে।
তখনকার মতন বিবাদ শেষে বাসর ঘরের বিষয়টি পছন্দ না হলেও কার্যত এক প্রকার বাধ্য হয়েই মেনে নিয়েছিল বাবুল। কিন্তু গভীর রাতে সকলে ঘুমিয়ে পড়লে ঘর থেকে বেরিয়ে ক্ষোভ এবং রাগে রান্নাঘরে গিয়ে নিজের গলায় দড়ি দেয় সে। ভোরে পরিবারের লোকজন বাবুলকে দেখতে পায় রান্নাঘরে ঝুলন্ত অবস্থায়।
স্বাভাবিকভাবেই শোকে বাকস্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো পরিবার। পরে বাবুলের ঝুলন্ত মৃতদেহ নামানো হয় এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। যদিও পুলিশের এই আত্মহত্যার বিষয়ে মতামত পরিবারের দেওয়া ব্যাখ্যার তুলনায় কিছুটা আলাদা। থানার পুলিশ অফিসার জামাল উদ্দিন বলেন, ‘‘এই ঘটনায় নিহত বাবুল হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ করা হয়নি। ফলে থানায় একটি অপঘাতে মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত এগোচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে এলে তবেই এই মৃত্যুর কিভাবে হয়েছে তার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’’