বলা হয় লঙ্কার অধিপতি দুর্ধর্ষ রাবণ নাকি পালকপিতা ব্রহ্মার প্রপৌত্র। শিবের চরম উপাসক। সেই তিনিই নাকি কোনও এক প্রতিহিংসার বশে ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের স্ত্রী মাতা সীতাকে অপহরণ করেছিলেন। সেই অন্যায়ের খেসারত নাকি তাঁকে জীবন দিয়ে দিতে হয়েছিল। অন্তত মহর্ষি বাল্মীকির লেখা রামায়ণ থেকে তেমনটাই জানা যায়।
তবে উল্টো পথেও হাঁটেন অনেকে। রাবণ তাঁদের কাছে লঙ্কেশ। যিনি হিন্দু ধর্মের চার বেদ ও ছয় শাস্ত্র গুলে খাওয়া মহর্ষি। তাঁদের কাছে রাবণ একজন দেবতা। ভারতেরই অন্তর্গত এমনই কয়েকটি স্থানের নাম উল্লেখ করা হল, যেখানে পূজিত হন লঙ্কার অধিপতি।
উত্তরপ্রদেশের বিসরাখ গ্রাম
উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডার কাছাকাছি এই গ্রামে নাকি রাবণের জন্ম হয় বলে স্থানীয়দের বিশ্বাস। দাবি, এই গ্রামের নামকরণ নাকি রাবণের পিতা বিশ্বশ্রবা-র নাম অনুসারে হয়েছে। এই গ্রামে নবরাত্রির পর রাবণের কাঠামো না পুড়িয়ে তাঁর পুজো করা হয়।
রাবণগ্রাম
মন্দোদরি দেবী নাকি রাবণকে বিবাহ করার আগে মধ্যপ্রদেশের বিদিশার অন্তর্গত এই গ্রামে কিছুদিন ছিলেন। মন্দোদরি এই এলাকায় কন্যা হিসেবে পূজিত। তাঁর সঙ্গে পূজিত হন রাবণও।
মধ্যপ্রদেশের মান্দসৌর
মধ্যপ্রদেশের এই অঞ্চলে রাবণের স্ত্রী মন্দোদরি দেবীর জন্মস্থল বলে পরিচিত। তাঁর নামেই এই এলাকাও নামাঙ্কিত। দশ মাথা বিশিষ্ট রাবণ এখানে জামাই হিসেবে পূজিত। কারণ এই স্থানেই নাকি রাবণ মন্দোদরিকে বিবাহ করেছিলেন বলে স্থানীয়দের বিশ্বাস।
যোধপুরের রাবণ মন্দির
রাজস্থানের যোধপুরের মৌদগিল ব্রাহ্মণরা মনে করেন যে রাবণ তাঁদের পূর্বপুরুষ। তাই এখানে মন্দির স্থাপন করে রাবণকে পুজো করা হয়ে থাকে।
হিমাচলের বাইজনাথ
হিমাচল প্রদেশের বাইজনাথ এলাকার এই স্থানে রাবণকে শিবের উপাসক হিসেবে পুজো করা হয়ে থাকে।
কানপুরের দশানন মন্দির
উত্তরপ্রদেশের কানপুরে অবস্থিত এই মন্দিরটি বছরে এক বারই খোলা হয়। স্থানীয়দের বক্তব্য, দশেরা বা দশহারা তিথিতে জন্মেছিলেন রাবণ। তাঁর মৃত্যুও হয়েছিল একই দিনে। তাই প্রতি বছর দশেরার দিন ওই মন্দিরে রাবণের পূজো হয়। ওই দিন সন্ধ্যেয় তাঁর কাঠামো পোড়ানো হয়।