অজয় দেবগনের বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে জার্নির শুরুটা খুব সহজ ছিল না। অজয় দেবগন বলিউডে নিজের প্রথম সিনেমা করার পরই যে তিনি তরতর করে কেরিয়ার সাফল্যের সিড়ি চড়েছেন এমনটা নয়। বিভিন্ন সময়ে তাকে নানা সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছিল, তার গায়ের শ্যামলা রং লুক চুলের স্টাইল।
কাজলের তখন বলিউডে বেশ সাফল্য। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে তখন ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সময় চলছে তার। এমনই সময় কাজলের মন কাড়লেন অজয় দেবগন। সম্পর্ক গড়ে উঠল তাদের মধ্যে। যদিও তখনও সেই ভাবে সাফল্য অধরা অজয়ের কাছে। স্ট্রাগেল করছেন নিজের ক্যারিয়ারে।
তাদের সম্পর্ককে সকলে খুব একটা সিরিয়াসলি নেন নি। কিন্তু তাও একসময় নিজের সিদ্ধান্ত কাজল বাড়িতে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি অজয় দেবগনকে বিয়ে করতে চান। তার কাছের বেশিরভাগ মানুষেরই এই ব্যাপারে মত ছিল যে, ক্যারিয়ারের এত হিট সময়ে এত অল্প বয়সে বিয়ের সিদ্ধান্ত, কেরিয়ার নষ্ট হয়ে যাবে। এই সব উপদেশ একবারেই শুনতে নারাজ ছিলেন কাজল। মা তনুজা কে কাজল সাহস করে বলেন, তিনি বিয়ে করতে চান, এবং তা অজয় দেবগনকে। মেয়ের কাছ থেকে শুনে কিছুটা অবাক হলেও মেয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আত্মবিশ্বাসকে সম্মান জানিয়েছিলেন তনুজা।
তবে কাজল জানিয়েছেন মা তনুজা তাঁর পাশে সবসময় ছিলেন বলে। এমনকি জীবনের এমন হিট সময়ে অনেকটাই কম বয়সে কাজলের বিয়ে করার বিষয়ে সন্মত ছিলেন না বাবা সমু মুখোপাধ্যায়। তখন মেয়ের পাশে দাড়িয়েছিল মা তনুজা। আসলে কাজলের বাবা মার বিচ্ছেদ যখন হয় যখন তখন কাজলের বয়স ভীষণই কম। ছোট্ট কাজল মাত্র সাড়ে চার বছরে পা দিয়েছেন। বিষয়টা তার জীবনের জন্যে বেশ জটিল হতে পারত। তাঁর কথায়, মায়ের কারণেই বাবা-মায়ের (তনুজা-সমু) আলাদা হয়ে যাওয়ার মত কঠিন পরিস্থিতিকেও তিনি সামলে উঠতে পেরেছেন।
কাজলের জানান, ” বাবা আমার চব্বিশ বছর বয়সে বিয়ে করে নেওয়ার পুরোপুরি বিরুদ্ধে ছিলেন, তিনি চেয়েছিলেন আমি বিয়ের আগে নিজের ক্যারিয়ারে মন দি বেশী করে। আমার এমন সিদ্ধান্তের কারণে ৪ দিন বাবা আমার সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেননি। তবে ওই সময় আমার পাশে ছিলেন মা। মা বলেছিলেন, আমার যা করার ইচ্ছা আমি যেন সেটাই করি।
এক সাক্ষাৎকারে কাজলের মা তনুজা জানিয়েছিলেন, মেয়ের আত্মবিশ্বাস দেখেই সাহস পেয়েছিলেন তিনি। এরপর ঘরোয়া ভাবে দুই পরিবারের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়েছিল অজয় ও কাজলের। ১৯৯৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, অজয় দেবগণের সঙ্গে কাজল বাঁধা পড়েন সাতপাকে। ছিলনা কোন ইলাহ আয়োজন, এমনকি তাদের বিয়ের ছবি তুলতে উপস্থিত ছিলেন কোনো প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারও। সেই থেকে তাদের দাম্পত্যের শুরু। আজও অটুট এই জুটির মধ্যে থাকা সম্পর্ক এর বন্ধন। তাদের প্রেমে রোমান্স কম সম্পর্কের প্রতি দায়িত্ববোধ বেশী ছিল, কেউ কাউকে কোনদিন আই লাভ ইউ টুকুও সেইভাবে বলেননি।
কাজল ও অজয় দেবগনের সেই সম্পর্ক আজও বলিউডের অন্যতম সেরা জুটি। রিল লাইফ সাথে রিয়েল লাইফ দুই একই সঙ্গে সামলাচ্ছেন তাঁরা। আর নিজের মেয়ের জন্য জামাই বেছে নিতে যে কোনও ভুল তিনি করেননি, তা বুঝতেও তনুজার খুব বেশিদিন সময় লাগেনি।