এক কিশোরী আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে গৃহত্যাগ করেছিল। এরপর আর কখনও ফিরে আসেনি সে বাড়িতে। বহু খুঁজেও তাকে আর পাওয়া যায়নি বলে বাড়ির লোকেরাও আর খোঁজেনি। শেষমেষ সেই হারিয়ে যাওয়া কিশোরীর খোঁজ পেলো বাড়ির লোক। এতদিনে অবশ্য পরলোক গমন করেছেন মেয়েটির মা। সপরিবারে সেই মেয়েকে নিয়ে সরকারের শিশু সুরক্ষা দপ্তরের সহায়তায় উড়িষ্যায় ফেরে।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল এই মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরী ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে। তাকে শিশু সুরক্ষা দফতর মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন হোমে পাঠায় বর্ধমান থেকে উদ্ধার করে। তখন তার ১১ বছর বয়স। কিন্তু হোমে সে মাঝেমাঝেই হিংস্র আচরণ করতো। মারধর করতো বাকিদের। তাই মেদিনীপুর থেকে ২০২০ সালে তাঁকে দাঁতনের মানবকল্যাণ হোমে পাঠানো হয়। সাড়া মেলে সেখানকার চিকিৎসায়। ঠিকানা জানতে চাইলে কিছু দিন আগে, একবার বালিচকের নামও বলে সেই সূত্র ধরেই পরিবারের খোঁজ শুরু হয়।
মৌসুমী হাজরা পশ্চিম মেদিনীপুর শিশু সুরক্ষা কমিটির সদস্যা বলেন, ‘ওকে যখন হোমে আনা হয়, ও তখন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। শুধুমাত্র নিজের নামটুকু সেই সময় বলতে পেরেছিল, পরশমণি মুর্মু। এর বাইরে আর কিছু বলার মতো অবস্থায় ও ছিল না। উল্কি রয়েছে ওর ডান হাতে। বীণা কথাটা তাতে লেখা। কিন্তু কিছুতেই পাওয়া যায়নি আর কোনও তথ্য ওর কাছ থেকে।
কিছু দিন আগে হঠাৎই একবার বালিচক কথাটা বলে ওঠে যখন ওকে ওর ঠিকানা জিজ্ঞাসা করায়। বালিচকে তখন জেলা প্রশাসন গিয়ে ওর পরিবারের খোঁজ করতে জানতে পারে, ওর বাবার নাম সত্যজিৎ সিং। সাপ খেলা দেখাতেন বাবা। বীণা সিং মায়ের নাম। ওরা এখন ওডিশায় থাকেন । খোঁজ করতে করতে ওর বাবাকে খুঁজে পাওয়া যায় ওডিশার জলেশ্বর থানার শালকাঠি গ্রামে। জানা যায়, ওর মা মারা গিয়েছেন মাস খানেক আগে। পরশমণির বাবা, দিদি, জামাইবাবুরা এসেছিলেন মঙ্গলবার। সরকারি নিয়ম মেনে বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয় পরশমণিকে। পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।’ পরশমনির বাবা সত্যজিৎ মেয়েকে ফিরে পাওয়ার পর সবাইকে ধন্যবাদ জানান।