ফুচকা খেতে ভালোবাসেনা এমন মানুষ পাওয়া ভার। কিন্তু অনেক সময়ই রাস্তার ধারের ফুচকা খাওয়া ঘিরে স্বাস্থ্য সচেতনতা ঘিরে সতর্কবাণীও দেন বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু তাতে কান কজনই বা দেই। এমনিতেই বর্ষাকালে রোগ বালাইয়ের শেষ নেই। বেশিরভাগ বর্ষাকালের রোগের কারণই হয় জল বা জল বাহিত রোগ জীবাণু। তাই এই সময় ফুচকা ইত্যাদি খাবার সকলে এড়িয়ে যেতেই বলে। কিন্তু ফুচকা খেয়ে একেবারে ৭১ জন অসুস্থ। তাও হাসপাতালে ভর্তি করতে হল।
হ্যাঁ একজন ফুচকা বিক্রেতার ফুচকা খেয়ে রীতিমত অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি হলেন ৭১ জন। বাংলা মিডিয়া সংবাদ প্রতিদিনের এক রিপোর্ট অনুযায়ী ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরের কাশেমনগরে। এমনকি এই একই জায়গা থেকে ফুচকা খেয়ে অসুস্থদের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকজন শিশু। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসাধীন সকলের অবস্থাই আপাতত স্থিতিশীল। এক সাথে এতজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে হওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যেই সেই ফুচকা বিক্রেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরের কাশেমনগরের একটি ফুচকার দোকান থেকে ফুচকা খেয়েছিলেন সেখানকার অনেকেই। এর পর থেকেই এক এক করে অনেকেই কিছু শারিরীক অস্বস্তি অনুভব করেন। ধীরে ধীরে শুরু হয় পেটে ব্যথাও। যত সময় গড়ায় তত অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। প্রথম দিকে কেউই খুব একটা গুরুত্ব না দিলেও পরে পেটে ব্যাথা কিছুতেই না করলে অসুস্থদের নিয়ে যাওয়া হয় কাছের হাসপাতালে। ইসলামপুরের কাশেমনগরের এত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসকরা তারা কি খেয়েছে জানতে চায়। এই কথা জিজ্ঞেস করতেই জানা যায় সকলে একই ফুচকাওয়ালার কাছ থেকে ফুচকা খেয়েছেন। দেখা যায়, যেই ফুচকা খেয়েছে তাঁরাই অসুস্থ। অসুস্থদের মধ্যে ৭০ জন বর্তমানে ইসলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি। একজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন রানিনগরের গোধনপাড়া ব্লক হাসপাতালে।
মুর্শিদাবাদ রানিনগর ১ নম্বর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক সুশোভন সাহা এই বিষয়ে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই অঞ্চলে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর সহকর্মীদের ওই অঞ্চলের মানুষের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে পুলিশের সঙ্গে গিয়ে হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের অবস্থা খতিয়ে দেখেছেন রানিনগর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও মহম্মদ ইকবাল। তিনি জানান, এখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই যার ফুচকা খেয়ে এতজন অসুস্থ সেই ফুচকা বিক্রেতাকে আটক করেছে পুলিশ। তবে যে গ্রামে এই অসুস্থতার ঘটনা হয়েছে সেই গ্রামবাসীদের ফুচকা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। তাঁদের কথায়, “ফুচকা বিক্রেতা লালন শেখ খুব ভাল মানুষ। প্রায়শঃই এই গ্রামে সে ফুচকা বিক্রি করে। আগে কখনো এমন কিছু হয়নি। মঙ্গলবারেও করেছে। একদিন যেটা হল সেটা দুর্ঘটনা।”