ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২ টা ছোঁয়ার আগেই ঠিক রাত ১১টা বেজে ৫৯ মিনিটে ক্যালেন্ডারের ডেট পরিবর্তন হয়ে ৩১শে আগস্ট পড়ার আগেই নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতই আফগানিস্তান ছেড়ে বেরিয়ে এল আমেরিকার সেনাবাহিনীর (US Army) শেষ ট্রুপ। সেনা বসানোর দীর্ঘ ২০ বছর পর আফগানিস্তানের মাটি থেকে (Afghanistan) থেকে সম্পূর্ণ রূপে সেনা প্রত্যাহার করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এর ফলে দীর্ঘ বহু বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটল। কিন্তু তালিবান ফিরে আসতে আবারও সেই দেশে তৈরি হয়েছে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি। তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতন নির্ধারিত ৩১শে আগস্টের একদিন আগেই আফগানিস্তানের মাটি ছাড়ল মার্কিন সেনা। এই দিন গভীর রাতেই তা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)। আর আমেরিকার সেনা সরিয়ে নিয়ে যাওয়াকে ‘সম্পূর্ন স্বাধীনতা’ হিসেবে দেখছে তালিবান। আমেরিকার শেষ সেনার ব্যাক্তি আফগানিস্তানের মাটি ছাড়তেই “পূর্ন স্বাধীনতার” ঘোষণা করে উচ্ছ্বাসে ফেটে পরে তালিবান। আতশবাজি ফাটিয়ে, গোলাগুলি চালিয়ে রাতভর এর উদযাপনও চলে।
আকাশে গুলি ছুড়ে উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করতে দেখা যায় অনেক তালেবানকে। কেউ কেউ গাড়ির উপর দাড়িয়ে রকেট লঞ্চারও ছুড়তে শুরু করে। আফগানিস্তানের রাজধানীতে মুহুর্মুুহ শোনা যায় রকেট, বন্দুকের গুলি আর বাজি ফাটানোর শব্দ। মার্কিন প্লেনগুলি রাতের আকাশে অদৃশ্য হতেই তালিবানরা গভীর রাতে রাস্তায় বেরিয়ে আনন্দ উদযাপন করতে থাকে। শেষ সেনা হিসেবে মার্কিন সি -১৭ বিমানে ওঠেন মেজর জেনারেল ক্রিস ডোনাহিউ। তালিবানের সূত্রে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের স্থানীয় সময় রাত ৯টায় মার্কিন সেনা নিয়ে শেষ বিমান কাবুল ছেড়ে গেছে। ফলে আফগানিস্তান এখন বিদেশি সৈন্য মুক্ত, তারা স্বাধীন। তাদের কথায়, ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানকে রক্তাক্ত করার পর অবশেষে ফিরে গিয়েছে মার্কিন সৈন্যরা।
তালিবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ মঙ্গলবার এক বিবৃততে জানিয়েছেন, “আমেরিকান সেনারা আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দর ছেড়ে চলে গিয়েছে। আমাদের দেশ এখন পুরো স্বাধীন।” পেন্টাগন এই মর্মে জানিয়েছে, ৩০ অগস্ট, অর্থাত্ গতকালই সব মার্কিন সেনাকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পেন্টাগনের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানে মার্কিনদের আর কোনও কূটনৈতিক প্রতিনিধি নেই। আফগানিস্তানের সমস্ত অফিস কাতারের দোহায় ট্রান্সফার করা হয়েছে। এরপর থেকে সেখান থেকেই কাবুলের সঙ্গে কূটনৈতিক কথা আলোচনা চালানো হবে।