আফগানিস্তান জুড়ে আবারও ফিরে এসেছে তালিবানের দাপট। আল কায়েদাকে উৎখাত করতে ২০০১ সালে চালানো এক বিধ্বংসী সামরিক অভিযানের পর তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করে গত ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানকে নিজের সামরিক নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রশক্তি নেটো বাহিনী। কিন্ত আমেরিকা সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টে গেছে। তালিবান বাহিনী নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে ফিরে এসেছে। আবারও চরম অত্যাচারিত হওয়ার পথে নারীরা। রীতিমত গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে সেখানে।
কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত এই আফগান ভূমির সঙ্গে রয়েছে কী মহাভারতের যোগ? কি বলছে পুরাণের গল্প? বহু ভারতীয়ই এটা বিশ্বাস করেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক প্রায় ৫০০০ বছরের বেশি। সেই মহাভারতের সময়কাল থেকেই। মনে করা হয় আফগানিস্তানের নগরী কান্দাহারই মহাভারতের যুগে পরিচিত ছিল গান্ধার নামে। তৎকালীন গান্ধার প্রদেশ আজকের আফগানিস্তান যুদ্ধে বিধ্বস্ত। রক্তস্রোত বয়ে চলেছে পাথুরে আফগান ভূখণ্ডের বুক চিরে। কিন্তু বহু মানুষের বিশ্বাস এর পেছনে রয়েছে ধৃতরাষ্ট্র পত্নী গান্ধারীর অভিশাপ। যার হাত থেকে আজও মুক্ত হতে পারেনি পাঠানদের ভূমি আফগানিস্তান। অন্তত ভারতের প্রাচীন পুরাণ এমনটাই বলছে।
পৌরাণিক মহাকাব্য মহাভারত অনুযায়ী প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে রাজা সুবল গান্ধারে শাসন করতেন। তাঁর মেয়ের নাম ছিল গান্ধারী। গান্ধারী বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হয় হস্তিনাপুরের অন্ধ রাজপুত্র ধৃতরাষ্ট্রের সঙ্গে। গান্ধারীর ভাইয়ের নাম ছিল শকুনি। তাঁর বাবার মৃত্যুর পর গান্ধার সাম্রাজ্যের অধিপতি হন শকুনি। কিন্তু হস্তিনাপুরের তার বাবা এবং তার বোনের সাথে করা অন্যায় মানতে পারেনি শকুনি। তার কুঅভিসন্ধিতেই কৌরব এবং পান্ডবদের মধ্যে হয় মহাভারতের যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে ধ্বংস হয় কৌরব। মহাভারত অনুযায়ী এর পর কৌরবদের কুপথে চালনা করার জন্য গান্ধারী শকুনিকে অভিশাপ দিয়ে বলেছিল, ‘গান্ধার রাজা, যে ভাবে তুমি আমার ১০০ ছেলেকে ধ্বংসের মুখে ফেলেছ সেইভাবে তোমার দেশেও কখনও শান্তি আসবে না।’
আফগানিস্তানে তালিবান শাসনের অত্যাচার আবার শুরু হতেই গান্ধারীর সেই অভিশাপ নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন কিছু মানুষ। এমনকি টুইট করেছেন তথাগত রায়ও। তাঁরা এটাই বলছেন, গান্ধারীর অভিশাপ থেকে সেদিনের সেই গান্ধার আজকের আফগানিস্তান আজও বেরোতে পারেনি। তাই শান্তি আসছে না আফগান প্রদেশে।