দুই রকম করোনা টিকার দুটি ডোজ টিকার মাধ্যমে নিলে তা শরীরে নাকি তৈরী করবে বেশী অন্টিবডি। এর পক্ষে সওয়াল করেছে অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞই। কিন্তু আসন্ন করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সামনে দাড়িয়ে কবে করোনা টিকা মিলবে সেই চরম উদ্বেগের মধ্যেই দুরকম টিকার মিশ্রণ ডোজ নিয়ে সতর্কবার্তা দিলেন সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার মালিক সাইরাস পুনাওয়ালা। জানিয়ে দিলেন, দুটি আলাদা সংস্থার দ্বারা প্রস্তুত দুটি আলাদা আলাদা ভ্যাকসিনের ডোজ ডেকে আনতে পারে বিপদ।
এদিকে করোনা ভাইরাস কে প্রতিহত করতে দুই ধরনের টিকার ককটেল কতখানি উপকারি হবে শরীরের জন্যে, তাই নিশ্চিত হতেও এবার শুরু হয়েছে আইসিএমএর (ICMR) -এর নানা পরীক্ষানিরীক্ষাও। এই পরীক্ষা চালানোর জন্য সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া বা DCGI-এর তরফে। শুধুমাত্র ৩০০ জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবীদের উপরেই কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিনের মিশ্র ট্রায়ালের ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজ এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাতে পারবে। যদি এই পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল মেলে তাহলে প্রথমে কোভিশিল্ড টিকা গ্রহণের পর দ্বিতীয় করোনা টিকা হিসেবে নেওয়া যেতে পারে কোভ্যাক্সিন। একই মানুষের শরীরে দুটি আলাদা আলাদা প্রস্তুতকারী সংস্থার আলাদা ডোজের টিকা কতখানি কার্যকর তা দেখতেই এই মিশ্র ডোজের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
কিন্তু এই মিশ্র ডোজ নিয়ে কোভিশিল্ড প্রস্তুতকারী সিরাম ইন্সটিটিউটের মালিকের গলায় শোনা গেল উলটো সুর। কোনো নাম উল্লেখ না করেই কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সাইরাস পুনাওয়ালা জানান, কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিন, এই দুই টিকার মিশ্র ডোজ প্রয়োগের এই পরীক্ষা বেশ বড় ভুল। এমন করে টিকা দেওয়ার আদৌ কোনো দরকার নেই। এরপর এই পরীক্ষার ফলে কোনও সমস্যার সৃষ্টি হলে টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি একে অপরকে দোষারোপ করা শুরু করবে। সিরাম সিইও আদর পুনাওয়ালার বাবা সাইরাস পুনাওয়ালা আরও জানান, এই ভাবে দু’টি টিকার মিশ্রণ মানবশরীরে প্রয়োগ করে কোনো বেশী আন্টিবডি তৈরী হয়েছে এই জাতীয় কোনো তথ্য এখনও কোথাও প্রমাণিত হয়নি।
প্রায় একই মতামত দিয়েছেন হু (WHO) -র চিফ সায়েন্টিস্ট সৌম্যা স্বামীনাথন। তিনিই এই মিশ্র টিকার ব্যাপারে সতর্কই করেছেন সবাইকে৷ তাঁর মতে, মিশ্র টিকা নিয়ে অ্যান্টিবডি তৈরীর এই প্রবণতা মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। সৌম্যা স্বামীনাথন জানিয়েছেন, দুটো আলাদা আলাদা ধরনের ভ্যাকসিন একজন মানুষের নেওয়া কখনই উচিত নয়৷ তাঁর মতে, মিশ্র টিকার কি কি কাজ সেই সম্পর্কে এখনও ভালো ভাবে কিছু জানা যায়নি। কোনও রকম তথ্যপ্রমাণও হাতে আসেনি। তাই সেটা না করাই ভালো৷