করোনা মহামারীর প্রভাব ভয়াবহ রূপ বিশ্বজুড়ে ধারণ করেছে। ফলশ্রুতিতে বেকার হয়ে পড়েছে লাখ লাখ যুবক অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত ভারতে। এর ফল মারাত্মক হচ্ছে। আত্মহত্যার মত চূড়ান্ত পথ সেই বেকারদের কেউ কেউ হতাশ হয়ে বেছে নিচ্ছেন। আর বহু বেকার কাজ খুইয়ে ভিক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন। উদ্বেগের বিষয় হলো এর সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন।
সম্প্রতি দিল্লি সরকারের একটি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, গত কয়েক মাসে দিল্লির রাস্তায় ভিখারির সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট- এর সেই সার্ভের রিপোর্ট বলছে, বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন করোনা মহামারীর এই চূড়ান্ত দুঃসময়ে। অসংখ্য মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সেখানে উঠে এসেছে। এখন 52 শতাংশ বেড়েছে বেকারের সংখ্যা দিল্লির রাস্তায়। গত পাঁচ বছর ধরে বহু নতুন ভিখারি দেখা গিয়েছে দিল্লির রাস্তায়। সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, ছোটবেলা থেকে মাত্র ৮ শতাংশ ভিখারি ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়েছে।
গত দেড় বছর ধরে সাধারণ মানুষ করোনা মহামারীর গোলে কার্ফু, লকডাউন, বিধি নিষেধ ইত্যাদিতে জর্জরিত । ভারতের রাজপথ ২০২০ সালে লকডাউনের সময় দেখেছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুমিছিল। তারা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছিলেন ভিন রাজ্যে কাজ হারিয়ে। কাজ হারানোর চিত্রটায় ২০২১ সালেও যে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি তা বোঝা যাচ্ছে আইএইচডি-র সাম্প্রতিক রিপোর্ট দেখলেই।
আইএইচডি-র রিপোর্ট বলছে, এমন মানুষদের দিল্লির বিভিন্ন রাস্তায় ভিক্ষাবৃত্তি করতে দেখা গেছে যাঁরা করোনা মহামারীর সময় কাজ হারিয়েছেন। কাজ হারিয়ে করোনা মহামারীর জন্য ভিক্ষা করতে বাধ্য হওয়া মানুষদের সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্য। তাঁদের মধ্যে অবশ্য অনেকেই ছোটখাটো কাজ করেন। কিন্তু যা টাকা হাতে আসে তা দিয়ে সংসার চলে না। ফলে তারা ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করছেন বাড়তি উপার্জনের জন্য। কুড়ি শতাংশ ভিখারি যাঁরা এই পেশায় আসার আগে দিনমজুর, ফ্যাক্টরি শ্রমিক, পরিচারক বা পরিচারিকা, কাগজ কুড়ানী হিসেবে কাজ করতেন এমনও রয়েছেন।