বিহারের মুঙ্গেরের ঘটেছে এক কুসংস্কার মধ্যযুগিয় বর্বরতার ঘটনা। নৃশংসভাবে মাত্র আট বছরের এক নাবালিকাকে বলি দিল অভিযুক্ত এক তান্ত্রিক। এই ভয়াবহ ঘটনায় জড়িত রয়েছে আরও তিনজন গ্রামবাসী, এমনটাই জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে চারজন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেছে বিহার পুলিশ।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম প্রকাশিত হয়েছে এই খবরটি, ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে পুলিশের কাছে ধরা পড়েছেন মুঙ্গেরের নয়া রামনগর পুলিশ স্টেশনের পাধাম গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ কুমার। জানা গেছে বেশ কিছুদিন আগে দিলীপ কুমারের স্ত্রী গর্ভবতী হলেও তার সন্তান জন্মের হওয়ার আগেই গর্ভপাতের ঘটনা ঘটেছিল। এরপরই ওই ব্যক্তি শরণাপন্ন হয় এক তান্ত্রিকের। পারভেজ আলম নামে ওই তান্ত্রিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দিলীপ কুমার নেয় ওই তান্ত্রিকের পরামর্শ। সেই তান্ত্রিক দিলীপ কুমারের স্ত্রীর গর্ভপাত ঠেকাতে পরামর্শ দেন নরবলির। জানান কোনও ছোট শিশুকে যদি বলি দেওয়া যায় তাহলে আর এই ধরনের গর্ভপাতের ঘটনা ঘটবে না। শুধু তাই নয়, বলি দেওয়া ওই শিশুটির চোখ উপড়ে যদি তাবিজের মতোন করে সেটি তার স্ত্রী গলায় ধারণ করে তাহলেও তার সন্তানের জন্ম ঘিরে হওয়া সমস্যার সমাধান ঘটবে।
জানা গিয়েছে, এরপরই পারভেজ আলম ১০ বছরের থেকে কম বয়সী কোনও নাবালক কিংবা নাবালিকাকে খুঁজে নিয়ে তার কাছে নিয়ে আসতে নির্দেশ দেয় দিলীপ কুমারকে। এই উদ্দেশেই গত ৪ঠা আগস্ট দীলিপ কুমার নামক ওই ব্যাক্তি আরো দুই ব্যাক্তি তনবীর আলম এবং দশরথ কুমারকে সঙ্গে নিয়ে এক তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণ করে। এরপর ওই তান্ত্রিকের নির্দেশ মত বাচ্চা সেই আট বছরের মেয়েটির চোখ উপড়ে দেয় তারা। তারপর তাকে দেওয়া হয় বলিও। এদিকে, মেয়েকে সময় মতন বাড়ি না ফেরায় থানায় ডায়েরি করে বাচ্চা মেয়েটির পরিবার। পরবর্তীতে খোঁজ করলে মেয়েটির ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনা ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হয়, মেয়েটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। পরিবারের লোকও একই অভিযোগ করতে থাকে। কিন্তু ঘটনার তদন্তে নামলে রীতিমত গা শিউরে ওঠে এমন বিষয় সামনে আসে। এরপরই এই শিশুটির মৃত্যুর সাথে জড়িত চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জেরায় নিজের করা কুকর্ম স্বীকার করে নেয় দিলীপ কুমার নামে মূল অভিযুক্ত। জানায় তান্ত্রিক পারভেজ আলমের কথা মতই বাচ্চাটিকে মেরে চোখ উপড়ে ফেলার মত ঘৃণ্য কাজ করেছে সে। এই হারহীম করা ঘটনাটি সামনে আসায় মুঙ্গেরের ওই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ওই চার দোষীদের অপরাধের জন্য কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন মৃত শিশুটির পরিবার , প্রতিবেশী এবং অন্যান্যরা।