চা বিশ্বের সব চেয়ে বেশি উপভোগ্য পানীয়। চীন দেশ হল চায়ের প্রাচীন জন্মভূমি। ১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে চীনেই প্রথম বাণিজ্যিক কারণে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। আর ভারতবর্ষে চা প্রথম চাষ শুরু হয় ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে। ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশরা সিলেটে সর্বপ্রথম চায়ের গাছ সন্ধান পায়।
শরীরের অবসন্ন বা ঝিম ধরা ভাব কাটাতে অনেকর কাছেই চা যেন মহৌষধি। আবার মাথা যন্ত্রণা বা ক্লান্তি কাটানোর ওষুধও এই চা। সর্বাধিক পান করা পানীয়ের মধ্যে জলের পরেই সারা বিশ্বে চা এর স্থান। সকলে ঘুম থেকে উঠে চায়ে চুমুক না দিলে যেন সকালটাই মাটি। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে চা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে নিজেই চুপিসারে ডেকে আনছেন নিজের ভয়ানক বিপদ। জেনে নিন খালি পেটে চা পান করলে কী কী মারাত্মক সমস্যা হতে পারে আমাদের শরীরে-
১) খালি পেটে চা পান করলে শরীরে বৃদ্ধি পায় অ্যাসিডিটি বা অম্বলের সমস্যা।
২) খালি পেটে লাল চা (Black Tea) খেলে পেট ফাঁপার সমস্যা তৈরি হতে পারে। যার ফলে পেটে তৈরি হয় একটা অস্বস্তি।
৩) সকালে প্রথমেই যদি চিনি দিয়ে চা খান, তাতে চায়ে থাকা চিনি মুখের ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ডিকম্পজ করে দেয়। ফলে লালারসে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় যা দাঁতের এনামেল নষ্ট করে যায়।
৪) খালি পেটে চা খেলে চায়ে উপস্থিত ট্যানিন শরীরের মধ্যে বমি বমি ভাব বা এই ধরনের কোনো অস্বস্তি তৈরি করে।
৫) দিনে ৪ থেকে ৫ কাপের অধিক চা পান করলে পুরুষদের প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।
৬) খালি পেটে চা পান করার অভ্যাস সময়ের সাথে সাথে শরীরের প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের সক্রিয়তা কমে আসে। ফলে শরীর তার দরকারী পুষ্টি পায় না। ফলে যতই সুষম আহার করুন না কেন শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না।
৭) খালি পেটে কড়া লিকারের চা খাওয়ার অভ্যাস অন্ত্রে আলসারের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
৮) খালি পেটে আদা চা খেলে বাড়তে পারে গ্যাসট্রিকের সমস্যা। আদা দেওয়া চা পান করতেও পছন্দ করেন কেউ কেউ। কিন্তু এ অভ্যাস আর গ্যাস্ট্রিককে ডেকে আনা একই কথা।
৯) খালি পেটে এ চা শরীরে বাড়ায় পটাশিয়ামের মাত্রা। যা কিডনির সমস্যা আছে এমন রোগীদের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর। খালি পেটে চা বাড়ায় জলশূন্যতা। সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রেও খালি পেটে চা পানের অভ্যাস অবশ্যই ত্যাগ করা উচিত।
পুষ্টিবিদেরা বলেন, চা নিঃসন্দেহে একেবারেই অস্বাস্থ্যকর পানীয় নয়। কিন্তু সকালে উঠে কিছু না খেয়ে খালি পেটে চা খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। কখন খাওয়া হচ্ছে, কীভাবে খাওয়া হচ্ছে, এই ক্ষেত্রে সেটি গুরুত্বপূর্ণ।