গতকালই মেরি কমের (Mary Kom) হারে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ১৩০ কোটি ভারতীয়ের। বিচারকদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে কোয়ার্টার ফাইনালে হতাশাজনক হারের মুখ দেখতে হয়েছিল ভারতের কিংবদন্তি মেরি কমকে। দেশবাসীর মনে নেমে আসে হতাশা তাহলে কি বক্সিং এ মেডেল অধরাই থেকে গেল ভারতের? কিন্তু না সেই উত্তরপূর্ব ভারতেরই আরেকজন আজ ইতিহাস গড়লেন। টোকিও অলিম্পিকে (Tokyo Olympics) ভারতের হয়ে অন্তত ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত করলেন ভারতের অসমের লভলিনা বরগোঁহাই (Lovlina Borgohain )। উত্তর পূর্ব ভারতের এই মেয়ে চাইনিজ তাইপে অর্থাৎ তাইওয়ানের বক্সার চেন নিয়েন চিনকে হারিয়ে বক্সিংয়ের ৬৯ কেজি ওয়াল্টার ওয়েট বিভাগে সেমিফাইনালে উঠে গেলেন। সেই সঙ্গে ভারতের লভলিনা বরগোঁহাই (Lovlina Borgohain ) অন্তত ব্রোঞ্জ পদক একেবারে নিশ্চিত করে ফেললেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে লভলিনা প্রতিপক্ষ কে হারালেন ৪-১ পয়েন্টের ব্যবধানে।
অলিম্পিক পদক নিশ্চিত করে লভলিনা বরগোঁহাই প্রথম অসমিয়া বক্সার হিসাবে অলিম্পিকে ইতিহাস গড়লেন। কোয়ার্টার ফাইলানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী চাইনিজ তাইপের চেন নিয়েন চিন ম্যাচের পূর্বে লভলিনার থেকে বেশ কিছুটা এগিয়েই শুরু করেছিলেন। কিন্তু ম্যাচ শুরুর পরই দ্রুত পাল্টাতে থাকে চিত্রটা। কোয়ার্টার ফাইনালের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করতে দেখা যায় লভলিনাকে। প্রথম রাউন্ডে তিনি জেতেন ৩-২ এর স্লিট পয়েন্টে। দ্বিতীয় রাউন্ডে রক্ষণ এবং আক্রমণের এই দুইয়ের সামঞ্জস্য বজায় রেখে রাউন্ডটি জিতে নেন সর্বসম্মতিক্রমে। বাকি শেষ রাউন্ডে শুধু নক-আউট না হলেই পদকের থেকে স্রেফ এক ধাপ দূরে ছিল লভলিনা। তাই সর্বশেষ রাউন্ডে কিছুটা রক্ষণাত্মক খেলেন তিনি। ম্যাচ শেষে বিচারকরা ৪-১ পয়েন্টের ব্যবধানে লভলিনাকেই জয়ী ঘোষণা করেন। বলতে গেলে গোটা ম্যাচে সেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি নিয়েন-চিন চেন।
ম্যাচ জেতার সাথে সাথেই ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম তুলে দেন অসমের এই বক্সার। সেমিফাইনালে জিতে ওঠার ফলে অন্তত ব্রোঞ্জ পদক আছেই। এবারে তা সোনা বা রুপোতে পরিনত হয় কিনা সেটাই দেখার। সেমিফাইনালে তাঁর প্রতিপক্ষ হতে চলেছে বিশ্বের ১ নম্বর তুরস্কের বুসেঞ্জে সেরমেনলি। তুরস্কের বক্সারকে হারাতে পারলে রুপোজয়ও নিশ্চিত করতে ফেলতে পারবেন তিনি। তার এই জয়ে আপ্লুত গোটা দেশ।