ভারতের দিল্লির এক ব্যক্তির সঙ্গে এমনই এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছিল। তিনি ২৯ বছর কোমায় কাটিয়েছেন। তিনি হঠাৎ কোমা থেকে সুস্থ হয়ে উঠে জানতে পেরেছিলেন ১৩০ কোটি রুপি তার আগের কেনা শেয়ার মূল্য!
আসলে ১৯৯০ সালে দিল্লির বাসিন্দা ওই ব্যক্তি শেয়ারগুলো কিনেছিলেন। তার জীবনে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যায় শেয়ার কেনার কয়েক দিনের মধ্যেই। তিনি দিল্লির রাস্তায় মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। তিনি চিকিৎসায় প্রাণ ফিরে পান, কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে পুরোপুরি সুস্থ করতে পারেননি।
তিনি কোমায় চলে যান সেই ১৯৯০ সাল থেকেই। তারপর জীবনের ২৯টি বছর ঘরের একটি বিছানায় শুয়ে কেটে গিয়েছে। এই ২৯ বছর তার পাশে সন্তানরা ছিলেন। তারা তার চিকিৎসায় কোনো কমতি রাখেননি। এর মাঝে বিয়ে হয়েছে ছেলে-মেয়েদের, নাতি-নাতনিও হয়েছে। সব মিলিয়ে অনেক বদলে গিয়েছিল তার চারপাশ ২৯ বছরে। তারপর হঠাৎই একদিন তিনি জ্ঞান ফিরে পেলেন। তাকে পরিবার-পরিজনদের নতুন করে চিনতে হয়েছিল। তখন নতুন বিশ্ব তার সামনে। সবকিছুই বদলে গিয়েছিল যেন। একটু একটু করে নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়েও নিলেন। দাদুর বেশ বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছিল নাতি রবির সঙ্গে।
একদিন তিনি এক এক করে নাতির কাছেই ২৯ বছর আগের স্মৃতিগুলি বলে যাচ্ছিলেন। কথা প্রসঙ্গে শেয়ারের কথা তার মনে পড়ে যায়। তিনি দুর্ঘটনার ঠিক আগে যেগুলো কিনেছিলেন। তিনি খুব কম দামে ২০ হাজার শেয়ার কিনেছিলেন। কিন্তু মনে করতে পারছিলেন না শেয়ারের কাগজপত্র কোথায় রেখেছিলেন। তার পর সেই কাগজপত্রগুলিও দাদু-নাতি দু’জনে মিলে খুঁজে বার করেছিলেন।
কিন্তু আদৌ এখন এত পুরনো শেয়ার কি বিক্রি করা যাবে? ২০১৯ সালের ঘটনা টেলিভিশন চ্যানেল-এ একাধিক অনুষ্ঠান হতো শেয়ার বাজার সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিতে। বিশেষজ্ঞরা তাতে দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হাজির থাকতেন। নাতি রবিই ওই টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ফোন করেন এক দিন দাদুকে পাশে নিয়ে। তিনি খুলে বলেন সব ঘটনা। তার প্রশ্ন ছিল আদৌ এগুলি বিক্রি করা যাবে কি না, আর গেলে সেগুলো কী উপায়ে বিক্রি করা যাবে। বিশেষজ্ঞরা তাকে জানিয়েছিলেন, প্রথমে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে দাদুর নামে। তারপর এই শেয়ারগুলিকে সেখানে নিয়ে আসতে হবে। তবেই তিনি কেনাবেচা করতে পারবেন শেয়ার। আর এক বিশেষজ্ঞ এরপরই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তাকে হিসাব কষে জানিয়ে দেন যে, ওই ২০ হাজার শেয়ারের এখন ১৩০ কোটি রুপি বাজার মূল্য! রীতিমত ভাইরাল হয়েছে ওই ভিডিও আর হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক কিংবা টুইটারে ভিডিওটি ঘুরছে ২০১৯ সাল থেকেই।