কোনটা খাঁটি, কোনটা নকল, তা বোঝার উপায় নেই যেন এই রাজ্যে। এক ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জান দেব (ফাঁকে IAS Debanjan Deb) কে ধরার পর থেকে এই রাজ্যে একের পর এক বেরিয়ে আসছে ভুয়ো আইএএস, ভুয়ো পুলিশ অফিসার, ভুয়ো সমাজকর্মী, ভুয়ো সিবিআই অফিসার, ভুয়ো সিবিআই-এর আইনজীবী, ভুয়ো রেলের আধিকারিক, ভুয়ো সেনার পদস্থ অফিসার এর পর এবার ভুয়ো ডাক্তার। মারা গিয়েছেন এমন এক চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ডাক্তারি করার অভিযোগে হাওড়ার সাঁতরাগাছি থেকে সঞ্জয় কুমার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে সঞ্জয় কুমার বলে ওই ব্যাক্তি যে ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করতেন তিনি বহু দিন আগেই মারা গিয়েছেন। এর পর সেই রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে সাঁতরাগাছি থানার কেটোপোল এলাকায় নিজস্ব চেম্বার খুলে নিজের ডাক্তারির পসার জমিয়ে বসিয়েছিলেন সঞ্জয় কুমার। সম্প্রতি নিজের পরিচয় গোপন রেখে ওই এলাকার জনা কয়েক মানুষ সাঁতরাগাছি থানায় পুলিশের কাছে সঞ্জয় কুমারের ডাক্তারি করার অধিকার রয়েছে কিনা সেই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর তদন্তে নামে পুলিশ, আর তদন্তে নেমেই ‘চিকিৎসক’ সঞ্জয় কুমারের ডাক্তারির জালিয়াতি ফাঁস করে সাঁতরাগাছি থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে অভিযোগ পেয়েই মঙ্গলবার সন্ধেয় দক্ষিণ বাকসাড়া এলাকায় অভিযুক্ত সঞ্জয় কুমারের চেম্বারে হানা দেয় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে দাবি, অভিযুক্ত সঞ্জয় বাবু তার ডাক্তারি করার সপক্ষে বৈধ কোনও পরিচয়পত্র না নথি দেখাতে পারেননি। দেখাতে পারেন নি ডাক্তারি পাশের সার্টিফিকেট বা রেজিস্ট্রেশন নম্বরের প্রমাণও। এরই ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যাবহার করে চিকিৎসা চালালেও এখনও অবধি সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা বা তাঁর চিকিৎসার কারণে রোগী মৃত্যুর কোনও অভিযোগ আসেনি। বরং যে এলাকায় তার চেম্বার সেই কেটোপোল এলাকার বাসিন্দাদের কাছে ‘ভগবান’ ডাক্তার সঞ্জয় কুমার। তাঁদের কথায়, ‘করোনার প্রথম দিকে যখন কোনও দিকে কোনো ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন এই সঞ্জয় কুমারই আমাদের সমস্ত রকম সমস্যায় চিকিৎসা করে গিয়েছেন। আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন।’ তাই সঞ্জয় কুমারের গ্রেফতারিতে মুষড়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।