Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

যে গ্রামে কোনো বাড়িতেই নেই কোনো দরজা! তালা নেই ব্যাঙ্কেও! অপরাধ মুক্ত

বারবার দেখে নিই নিজেদের বাড়িতে, দরজাটা তালাবন্ধ করেছি তো ঠিক করে? হুড়কো টা লাগিয়েছি তো লকগেটে? যেখানে চোর-ডাকাতের ভয় নেই, ভারতের কোনও জায়গা বোধহয় এমন নেই।

মহারাষ্ট্রের একটি গ্রাম ব্যতিক্রম। ভারতের কোনো দরজা সত্যিই নেই এই গ্রামের বাড়িগুলোর। শনি শিংনাপুর (Shani Shingnapur) এমনই একটি গ্রাম ভারতের মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলার। গ্রামবাসীর দরজা সব সময় খোলা থাকে, যেখানে প্রতিবেশীদের জন্য তো বটেই, বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থীদের জন্যও । কিন্তু কেন দরজাবিহীন বাড়িগুলো? মানুষেরা নির্ভয়ে জীবন কাটান । এই গ্রামের কোনও বাড়িতেই দরজা লাগানো নেই। তা-ও ভিতরে টাকা-পয়সা, গয়না, দামি জিনিসপত্র চুরি যায় না! শুধু বাড়িতে কেন, এলাকার দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, সরকারি বিল্ডিং, ব্যাঙ্ক— কোথাও কোনও দরজা নেই।

কিন্তু এই যুগেও কি করে অপরাধশুন্য এই গ্রাম?

অধিষ্ঠান শনি দেবতার এই গ্রামেই। ‌সয়ম্ভু যাঁর প্রকৃত নাম । প্রতিদিন হাজারে হাজারে মানুষ ভিড় জমান এই জাগ্রত মন্দিরে। থাকেননা দেবতা। খোলা আকাশের নীচেই তাঁর অধিষ্ঠান। তিন হাতের শনি দেবতার দর্শন পাওয়া ‌যায় এক খণ্ড মাটিতে স্থাপন করা পাথরের কালো খাম্বা রূপে। ৩০০ বছরের পুরোনো কিংবদন্তি এই মন্দির ঘিরেই রয়েছে। জনশ্রুতি আছে, কিছু রাখাল পাথরের একটি স্তম্ভ নদীতে ভেসে যেতে দেখে তা উদ্ধার করে সতেরো শতকের কোনো এক সময়। পাথরটায় লাঠি দিয়ে খোঁচা দিলে সেটা থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে শুরু করে, যা সারা গ্রামের লোক জমায়েত হয় দেখার জন্য । অতঃপর স্বপ্নে মন্দির নির্মাণের নির্দেশ পেয়ে সেখানে শনির মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। আরও কথিত আছে, স্বপ্নে শনি বলেছিলেন, কখনো চুরি-ডাকাতির ভোগান্তিতে পড়বে না এই গ্রামের লোকজন।

গ্রামবাসীর বিশ্বাস শনির ওপর এতই দৃঢ় যে তারা ঘরের দরজা তৈরি করার প্রয়োজন বোধ করে না। মন্দিরগুলো দর্শনের জন্য প্রতিদিন চল্লিশ হাজারের বেশি ভক্ত শনি শিংনাপুরে আসে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, কোনো দোকানেই তালা বা চাবি কিনতে পাওয়া যায় না, শুধু বাসা নয়, শুধু বাড়ি নয়, হোটেল, থানা, এমনকি ব্যাংকেও কোনো তালা নেই! গ্রামবাসীর বিশ্বাস, দরজা বা তালা ব্যবহার করলে তা দুর্ভাগ্য বয়ে আনবে তাদের জন্য। আর অসৎ কেউ যদি চুরি করার চেষ্টাও করে, শনি শিংনাপুরে । তবে সে রেহাই পাবে না প্রভু শনির শাস্তির হাত থেকে।

Related posts

কলকাতার বুকে রমরমিয়ে স্পায়ের আড়ালে দেহব্যবসা! পুলিশ হানা দিতেই ধরা পড়ল মূল পাণ্ডা সহ ৪

News Desk

করোনার সংক্রমনে স্বস্তি মিলল দেশের, একধাক্কায় অনেকটা কমলো দৈনিক সংক্রমণ

News Desk

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ হবে! ‘স্বপ্না ফ্রেন্ডশিপ ক্লাবের’ সদস্য হতে গিয়ে চরম বিপদে বৃদ্ধ

News Desk