আমরা মানুষ যা এই বিশ্বে নশ্বর। কিন্তু স্মৃতি কি থেকে যায়? তা ভীষণ কঠিন মুছে দেওয়া। যতদিন মানুষের বেঁচে থাকা, ততদিনই স্মৃতি আঁকড়ে ধরে রাখা মনের মধ্যে। দিনরাত হারিয়ে যাওয়া সেই স্মৃতির সঙ্গে আগলে রাখার চেষ্টা প্রিয়মানুষকে। ঠিক একরমই ভাবনা চিন্তাকেই অস্ট্রেলিয়ার এক মহিলা একেবারে ক্রিয়েটিভ আকার দিয়ে ফেললেন। সেই মহিলার নাম জ্যাকুই উইলিয়ামস (Jacqui Williams)। যিনি জুয়েলারি ডিজাইনার (Jewellery designer) পেশায়। তবে তিনি এখন একেবারে অন্যনামে পরিচিত। তিনি এখন গোটা বিশ্বে প্রিয় মানুষকে কাছে রাখার মাস্টার হিসেবেই পরিচিত। আর এটি তিনি গয়না তৈরি করে করে থাকেন। এখন সাধারণ গয়না একেবারেই অচল ডিজাইনার জ্যাকুইয়ের কাছে। বরং গয়না এমন হওয়া দরকার কোনও গল্প বা স্মৃতি যার সঙ্গে আটকে থাকে। এমনটাই জ্যাকুইয়ের মত। তাই জ্যাকুই গয়না তৈরির ব্যাপারে মৃত মানুষের দাঁত, নখ, চুল বেছে নিলেন এমনকি গয়না তৈরিতে ভস্মও ব্যবহার করা হচ্ছে।
জ্যাকুই জানিয়েছেন, “আসলে যখন আমাদের প্রিয় মানুষেরা ছেড়ে চলে যায়, সাধারণত আমরা স্মৃতিতে ডুব মারি তাঁদের ছবি দেখেই। কিন্তু ছবিতে কী স্পর্শ থাকে সেই মানুষটির! এই চিন্তা থেকে আমার মাথায় আসে, যে গয়না বানানো যেতে পারে মৃতের শরীরের কোনও অংশ যা নাকি নষ্ট হবে না এবং স্মৃতিকেও ধরে রাখতে পারবে তা দিয়ে। গয়না বানানোর প্ল্যান ঠিক এই ভাবনা থেকেই।”
অস্ট্রেলিয়ার এই ডিজাইনারের কথায়, “প্রথমে কিছু মানুষদের নিয়ে যারা আমার চেনা, তাদের সাথে কাজ শুরু করি। প্রথম দিকে গয়না তৈরি করতাম মৃতের দাঁত ও চুল ব্যবহার করেই। তবে এখন, সেটাই করে দিই যেটা ক্রেতা যেরকমভাবে বলেন।” একথা বলতে গিয়েই এক অদ্ভুত ঘটনার কথা জানান ডিজাইনার। জ্যাকুই বলেন, “এক ক্রেতার দাদু আত্মহত্যা করেন মাথায় বন্দুক চালিয়ে । আমি মৃতের মাথার খুলিতে আটকানো সেই গুলি দিয়েই একটি আংটি বানিয়ে দিয়েছিলাম!”
জানা গিয়েছে,অনেকে গায়ে পরেন জ্যাকুইয়ের তৈরি করা এই গয়নাগুলো । অনেকে প্রিয়মানুষের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে শুধুই কাচের আলমারিতে রেখে দেন।