এবার শিহরণ জন-মানবহীন সাহারার বুকে! আর হবে নাই বা কেন। গাছের খোঁজ পাওয়া গেল ধূ-ধূ মরুপ্রান্তরে বুকে। পশ্চিম আফ্রিকার এই মরুভূমিতে স্যাটেলাইট মারফত পাওয়া ছবি থেকে বোঝা গেল একটা দুটো নয়, ১৮০ কোটি গাছ রয়েছে।
এএফপি-কে গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা মার্টিন ব্র্যান্ড এর দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে স্বাভাবিক ভাবেই তারা খুবই আশ্চর্য হয়েছেন! সাহারায় যে এত গাছ জন্মায়, তা তারা না কি এত দিন জানতেনই না! নেহাত কম নেই মরুভূমিতে উদ্ভিদশুন্য একেবারে রুক্ষ অংশও, কিন্তু চমৎকার বিষয় হল বালির নিচেও গাছ জন্মাচ্ছে, কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানের অধ্যাপক ব্র্যান্ড জানিয়েছেন।
বলাই বাহুল্য, এই আবিষ্কার খুব সাহায্য করবে পরিবেশবিদদের গবেষণায়। কতটা কার্বন জমছে সারা বিশ্বে, আরও নিখুঁত হবে সেই হিসেব।
গাছ জন্ম নিতেই পারে মরুভূমিতে, এতে ভয়ের কী আছে? আসলে কিন্তু খুব ভালো সংবাদ নয় মরুভূমির বুকে গাছ জন্মানোর বিষয়টি।
ক্রমশ বদলে যাওয়া পৃথিবীর জলবায়ুর প্রভাব দেখতে পাচ্ছেন পরিবেশবিদরা এর পিছনে। ঠিক এই একই কারণে প্রচুর সবুজ উদ্ভিদ বরফঢাকা অ্যান্টার্কটিকার শীতল বুকেও জন্ম নিচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কী এর পরিণাম, বিজ্ঞানীরা তা নিয়ে ভাবছেন!
পরিবর্তনটা তখন লক্ষ্য করা সহজ হবে আগামী এক, দুই অথবা দশ বছর পর আবারও স্যাটেলাইট ছবি পেলে। রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছে মার্টিন ব্র্যান্ড এবং তার গোটা দলকে বিশাল মরুভূমিতে সবুজের খোঁজ করে হিসাব রাখার মতো কঠিন কাজটি করতে।
সহকর্মীদের সঙ্গে ডেনমার্কের ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের মার্টিন ব্র্যান্ড ১১ হাজার ১২৮টি স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে বিশ্লেষণ করেছেন। উদ্ভিদের পরিমাণ নির্ণয়ের চেষ্টা করেছেন পশ্চিম আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি, সাহেল এবং দক্ষিণের তুলনামূলক আর্দ্র অঞ্চলের পাঁচ লাখ বর্গমাইলে। তাঁরা ছবি বিশ্লেষণ করে ওই অঞ্চলে মোট ১৮০ কোটি আলাদা উদ্ভিদ পান।
গবেষণাপত্রে তাঁরা জানিয়েছেন, এমন উচ্চ ঘনত্বে উদ্ভিদ থাকতে পারে মরুভূমিতেও, তাঁদের তা জানা ছিল না। মোট কথা, বিদ্যমান ধারণা বদলে দিয়েছে মরুভূমি সম্পর্কে। লিখেছেন, ‘আমরা এখানে পদ্ধতির বিবরণসহ প্রমাণ দিয়ে দেখিয়েছি যে আলাদা করে শনাক্ত করা সম্ভব প্রতিটি উদ্ভিদ ।’