একদিকে ফের করোনার কারণে লকডাউন। অন্যদিকে অভিজ্ঞতা নেই রেস্তোরাঁ চালানোর। গত বছরের সোশ্যাল মিডিয়া খ্যাত ‘বাবা কা ধাবা’-র নতুন রেস্তোরাঁ শুরুর ছ’মাসের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেল। তাই আপাতত ‘বাবা’ কান্ত প্রসাদ ও তাঁর স্ত্রী রাস্তার স্টলেই ফিরেছেন।
সকলের অনুদানের টাকায় রেস্তোরাঁ খুললেও বেশিদিন তা চলল না। বাবা কা ধাবা সেই আগের মতো স্টলেই ফিরে এল কয়েক মাস যেতেই । খদ্দেরের আগের মতোই অভাবও । গত বছর অক্টোবরে দিল্লির ‘বাবা কা ধাবা’ স্টল হঠাত্ই ভাইরাল হয় । একটি ভিডিয়ো বানান দিল্লির ইউটিউবার বাবা কা ধাবায় খেতে গিয়ে। সেখানে ৮০ বছরের বৃদ্ধ স্টল মালিক তাঁর ব্যবসায় মন্দার কথা জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। তিনি খরিদ্দারের অভাবের কথা জানান।
ভিডিয়োটি ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবে লাখ লাখ ভিউ হয় । সেই ইউটিউবারের মারফতই বহু মানুষ টাকা পাঠান ‘বাবাকে’ সাহায্যের জন্য। তাছাড়া অনেকেই হাজির হন সেই স্টলে ভিডিয়ো, সেলফি বা সরাসরি দেখা করতে। রাতারাতি সেল তুঙ্গে উঠে যায়।
প্রচুর অনুদান আসতে থাকে । যা সব মিলিয়েকয়েক লক্ষ টাকা। নিজের রেস্তোরাঁ খুলে ফেলেন প্রসাদ, সমাজকর্মী তুষান্ত অদলখার পরামর্শ ও সহযোগিতায় সেই টাকায় একটি দোকান ভাড়া করে ডিসেম্বরে।
প্রসাদ জানান, ‘ আমাদের ভুল পরামর্শ দিয়েছিলেন তুষান্ত। কাল হল রেস্তোরাঁ খোলাই।’ কেন বৃদ্ধ এমনটা বলছেন ? ‘দোকানটা মাসে ৩৫ হাজার টাকা ভাড়া দিতাম। মোট ৩৬ হাজার টাকা তিন কর্মচারীর বেতন। ১৫ হাজার টাকা ইলেকট্রিক আর জলের বিল। আর তার উপর রান্নার জিনিস কেনার খরচ। সব মিলিয়ে খরচ হত প্রায় ১ লক্ষ টাকা। কিন্তু মাসে বিক্রি হত না ৪০ হাজার টাকারও,’ জানালেন তিনি।
সব মিলিয়ে দোকানটি করতে ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। তার মধ্যে বাসন ও টেবিল চেয়ার বিক্রি করে মাত্র ৩৬ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
নতুন রেস্তোরাঁয় প্রসাদ আগের মতো ডাল-ভাত, রুটি-সবজির মেনু করেননি । ‘চাইনিজ’, ‘ইন্ডিয়ান’ মেনু ছিল। নিজে রান্না করতেন না আগের মতো। ৩ জন রাঁধুনি-কর্মচারী ছিল। আর কাউন্টারে তাঁর দুই ছেলে বসতেন ।
এদিকে তুষান্তের দাবি, ‘ ওঁদের দোকানটা খুলতে আমি ও আমার টিম সবরকম সাহায্য করেছি। এদিকে দোকানে আসতই না ওঁর দুই ছেলে ব্যাবসায় অবহেলা করে। লকডাউন তো কী হয়েছে? অনেক অর্ডার আসত হোম ডেলিভারির, ওঁরা তো গা-ই করতেন না। এভাবে চলে নাকি দোকান! কী করব আমরা ?’