বিজ্ঞান হয়তো পৃথিবীতে অনেক উন্নতি করেছে, কিন্তু কিছু জিনিস আছে যেগুলো সমাধানে কেউ বিশেষ কিছু করতে পারছে না। বর্তমান সময়ে স্থূলতা এমন একটি স্বাস্থ্য সমস্যা বা রোগ, যার সামনে সবাই অসহায়। কিন্তু এমন কিছু মানুষ আছে যারা এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েও অনন্য। এমনই একজন মুম্বাইয়ের ১৯ বছর বয়সী মধুসূদন ভারতী। তার ওজন নিয়ে অনেকেই মজা করেছিল, তবে তার মধ্যে এতটাই ইতিবাচকতা রয়েছে যে তার উপর এর কোনও প্রভাব পড়েনি। আসুন জেনে নেওয়া যাক যে যখন অল্প বয়সেই মধুসূদনের ওজন বহুগুণ বেড়ে যায় এবং লোকেরা তাকে নিয়ে ঠাট্টা করতে শুরু করে, তখন তিনি কীভাবে সাড়া দিয়েছিলেন?
ফলো করেন ২ লাখ ১৩ হাজারের বেশি মানুষ
স্থূলতা সত্ত্বেও মধুসূদন অত্যন্ত সৃজনশীল। তিনি ইনস্টাগ্রামে রিল এবং ভিডিও পোস্ট করতে থাকেন। শুরুতে ভালো সাড়া না পেলেও পরে অনেকের বেশ ভালো লেগেছে। এখন তার ২১৩ হাজার অনুসরণকারী রয়েছে। তার ক্রিয়েটিভ ভিডিওগুলো প্রচুর লাইক ও কমেন্ট পায়। এই সৃজনশীলতার মাধ্যমে তিনি নিজের ইতিবাচকতা খুজেঁ পায়।
১৯ বছর বয়সেই স্থূলতা রোগ
মধুসূদন ভারতী একজন ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সর। তিনি মহারাষ্ট্রের নান্দেদে থাকেন। তার বয়স ১৯ বছর। বিশেষ বিষয় হল এই বয়সেই তিনি স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু তিনি সেইসব লোকদের জন্য অনুপ্রেরণা যারা স্থূলতার সমস্যার কারণে নিজেদেরকে অক্ষম ভাবতে শুরু করেন। মধুসূদনের মধ্যে এতটাই ইতিবাচকতা রয়েছে যে লোকেরা তাকে অনেক উপহাস করেছিল কিন্তু তিনি তার কাজ চালিয়ে যান।
মধুসূদন নাচের প্রতি অনুরাগী
মধুসূদনকে দেখে মনে হয় তিনি কিছুই করতে পারবেন না, কিন্তু তিনি নিজেকে এমনভাবে সক্রিয় করেছেন যাতে তাকে বসে না থাকতে হয়। লকডাউনে তিনি ইনস্টাগ্রামে ভিডিও পোস্ট করতে শুরু করেন। তিনি নাচের শৌখিন। যদিও তিনি স্থূল, নাচেন। তার ভিডিওতে প্রচুর কমেন্ট আসে। তার শুরুটা ভালো হয়েছিল বলা যাবে না, কিন্তু এখন তার এত বেশি ফলোয়ার যে তার ভিডিও দেখে ভাইরাল হয়ে যায়।
‘ নেচো না পৃথিবী ফেটে যাবে’
মধুসূদন যখন তার সৃজনশীল ভিডিও নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হন, তখন তিনি অশালীন মন্তব্য পান। মানুষ কমেন্টে লেখে, ‘দেখ, হাতি নাচছে, নাচবে না- পৃথিবী ফেটে যাবে, দেখো, হাতির বাচ্চা দোল খাচ্ছে, তুমি করো না।’ কিন্তু তিনি নিজেকে এসবের মধ্যে জড়াতে দেননি এবং প্রতিনিয়ত ভালো ভিডিও বানানোর চেষ্টা করেছেন। মধুসূদন এতটাই ইতিবাচক যে তিনি কোনো নেতিবাচক বিষয়কে তার মনে গুরুত্বের সাথে নেন না এবং এই কারণেই তিনি নিজের মধ্যে শান্ত থাকেন।
ডাক্তাররা কি বলেন?
চিকিৎসকরা বলছেন, মধুসূদনের স্থূলতা একটি জেনেটিক সমস্যা। এটা কমানো খুব কঠিন। এটি নিয়মিত ব্যায়াম এবং একটি মাঝারি ডায়েট রুটিন দ্বারা হ্রাস করা যেতে পারে। চিকিত্সকরা বলছেন যে এটি ব্যক্তির ক্ষুধা সম্পর্কিত একটি জিনের পরিবর্তনের কারণে হয়। পরে এটি একটি জিনে পরিণত হয় এবং একটি জেনেটিক প্রবণতায় পরিণত হয়। স্থূলতা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে চলে যায়, তাই একে বলা হয় মনোজেনিক স্থূলতা। এই হরমোন মধুসূদনের কাছে এসেছে তার মায়ের কাছ থেকে।