রাজস্থানের আজমির জেলার শ্রীনগর থানা এলাকায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চার যুবকের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার চার যুবক ছিলেন একে অপরের খুড়তুতো ভাই (Four Brother Died Together)। দুর্ঘটনার পর সেখানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। একটি শিশু খাদে পড়ে যাওয়ার কারণে, পরে তাকে বাঁচাতে গিয়েই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ দুর্ঘটনায় আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর দুর্ঘটনাস্থলে গ্রামবাসীর ভিড় জমে যায়। ক্রমবর্ধমান হট্টগোল দেখে জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারও গভীর রাতে সেখানে পৌঁছে গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে শান্ত করেন। জানা গিয়েছে এরপর লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, আজমির জেলার শ্রীনগর থানার অন্তর্গত লাভরা গ্রামে রবিবার অর্থাৎ ২৮ শে আগস্ট বিকেলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। সেখানে একটি শিশু প্রায় শুকনো একটি কুন্ডে পড়ে গিয়েছিল। তাকে বাঁচাতে একের পর এক পরিবারের চার যুবক নেমে পড়েন। কিন্তু কেউ উঠে আসেনা। পরে আরও তিনজনও সেই কুন্ডে নামলে পাঁচজনই অজ্ঞান হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পরে সবাইকে সেখান থেকে বের করে এনে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চার যুবককে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নাসিরাবাদ হাসপাতালের মর্গে রাখে।
আর্থিক সাহায্যের দাবিতে অনড় গ্রামবাসী:
মৃতদের মধ্যে শয়তান গুর্জার, দেবকরণ গুর্জার, শিবরাজ গুর্জার এবং মহেন্দ্র গুর্জার রয়েছে। এই চারজন ছিল খুড়তুতো ভাই। তাদের বাঁচাতে ওই কুন্ডতে নামা আরও তিনজনের স্বাস্থ্যেরও অবনতি হয়। ছোট্ট শিশুসহ আহত তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আজমীরে রেফার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে প্রাক্তন বিধায়ক রামনারায়ণ গুর্জারও নাসিরাবাদ হাসপাতালে পৌঁছে যান। তিনি নিহতদের স্বজনদের জন্য প্রশাসনের কাছে আর্থিক সহায়তার দাবি জানান। পরে পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসীরাও ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তার দাবিতে অনড় থাকে।
দাবি না মানা পর্যন্ত তারা দেহ উঠাতে অস্বীকৃতি জানান। ধীরে ধীরে সেখানে গ্রামবাসীর সমাগম বাড়তে থাকে। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী নাসিরাবাদ মর্গের বাইরে অবরোধ করে। এতে উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে। ঘটনাস্থলে জেলাশাসককে ডাকার দাবিতে অনড় থাকে গ্রামবাসীরা। উত্তেজনা বাড়লে গভীর রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে তিনি ভিড় ভেঙে দেন। সোমবার লাশের ময়নাতদন্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বিষাক্ত গ্যাসেই মৃত্যুর সম্ভাবনা
মৃত্যুর কারণ এখনও পুরোপুরি প্রকাশ করা হয়নি। ওই কুন্ডতে খুব কমই জল রয়েছে বলা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কুন্ডে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় যুবকদের মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। পরীক্ষার জন্য জলের নমুনাও নেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখতে ব্যস্ত পুলিশ। দুর্ঘটনার পর লাভেরা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।