কয়েকদিন আগেই গেছে রাখি। রাখি বা রক্ষাবন্ধন ভাই বোনের পবিত্র ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ভালোবাসা পূরণের জন্য, রাজস্থানের ফতেহপুরের এক বোন তার শহীদ ভাইকে রাখি বাঁধতে প্রতি বছর ৮০০ কিলোমিটার দূরে আসে। তার বোন উষা শহীদ ভাই ধরমবীর সিং-এর মূর্তির কাছে রাখি বাঁধতে এত দীর্ঘ পথ পাড়ি দেন।
ঊষা দেবী জানান যে তার ভাইয়ের সাথে ভালবাসার বন্ধন সর্বদা হৃদয়ে থাকবে, তাই তার ভাইয়ের শহীদ হওয়ার ১৭ বছর পরেও তিনি তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত মর্মর মূর্তির হাতে রাখি বাঁধতে ভোলেন না। রক্ষাবন্ধনে তার ভাইকে স্মরণ করে ঊষা বলেন, তিনি স্মৃতিতে বেঁচে আছেন কিন্তু বাস্তবে নয়।
দেশের সেবায় শহীদ হওয়া ভাইয়ের প্রতি এই ভালোবাসাই এখন মানুষের কাছে দৃষ্টান্ত। দিনওয়া লাদখানি গ্রামে, শহীদ ধরমবীর সিং শেখাওয়াতের বোন উষা কাওয়ার, ১৭ বছর ধরে আহমেদাবাদ থেকে এখানে শহীদ ভাইয়ের মূর্তির কাছে রাখি বাঁধতে আসেন।
বোন উষা কানওয়ার বলেন, ভাই দেশের সেবার জন্য মারা গেছেন, তাকে খুব মিস করি। তিনি আসলে বেঁচে নেই কিন্তু তিনি বেঁচে আছেন আমাদের হৃদয়ে। তিনি মানুষের জন্য মৃত হতে পারেন কিন্তু তিনি আমাদের নতুন পথ দেখানোর জন্য জীবিত। গত শনিবার এই রাখি বন্ধনের পবিত্র দিনে যখন বোন ঊষা কানওয়ার শহীদ ধর্মবীরের মূর্তির কাছে রাখি বাঁধেন, তখন তিনি আবেগে কাঁদতে শুরু করেন।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখা যাক যে ধর্মবীর সিং কাশ্মীরের লাল চকে পোস্টড ছিলেন, যেখানে তিনি ২০০৫ সালে সন্ত্রাসবাদী হামলায় শহীদ হয়েছিলেন। এই কাহিনীটি শুধুমাত্র দিনওয়া গ্রামের নয়, গোটা শেখাবতীর।
রক্ষাবন্ধনে, শহীদ ভাইদের বোন তাদের মূর্তির হাতেই রাখি বাঁধেন কারণ আজও তার ভাই সেই সমস্ত বোনের জন্য বেঁচে আছেন। একইভাবে হাজার হাজার বোন সীমান্তে তাদের সামরিক ভাইদের কাছে রাখি পাঠায় যাতে তারা দেশকে রক্ষা করতে পারে।
দ্বীনওয়া লাদখানিকে এমনিতেই শহীদদের গ্রাম বলা হয়। গ্রামে তিনজন শহীদের মূর্তি রয়েছে। তাদের দেখে হাজার হাজার যুবক এখনো সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন লালন করে। কদিন আগেই গেছে রাখি, আর তারপরেই আজ ভারতের স্বাধীনতা দিবস। এই সময় এই কাহিনী যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ন।