স্ত্রীকে এক অদ্ভুত ভাবে শ্বাসরোধ করে শাবল দিয়ে খুন করে নিজেই আবার আত্মসমর্পণ করলেন পুলিশের কাছে । পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের পানোয়া গ্রামের বাসিন্দারা রবিবার দিন এমনই ঘটনা প্রত্যক্ষ ভাবে দেখলেন। তদন্তের পাশাপাশি পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
প্রায় বছর ১৩ আগে কাটোয়ার গাঙ্গুলিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা শেখ রহমতের সঙ্গে ভাতারের পানোয়া গ্রামের মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা বছর ২৯ এর মমতাজ খাতুনের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকে গাঙ্গুলিডাঙ্গা ছেড়ে পানোয়া গ্রামে বসবাস শুরু করেন পেশায় রাজমিস্ত্রি শেখ রহমত। তাঁর বাড়ির পাশেই মেয়ে-জামাইয়ের বসবাসের জন্য জায়গা দেন শ্বশুর শেখ মোমিন। দুই কন্যাসন্তানও তাঁদের রয়েছে। রবিবার মমতাজকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে ।
কল্যাণ সিংহরায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘আলিনগর চৌরাস্তার মোড়ের কাছে রবিবার খুব ভোরে পুলিশের টহলদারি ভ্যান দাঁড়িয়েছিল। পুলিশ কর্মীরাও গাড়ির পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন। শেখ রহমত তখন সাইকেলে চড়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দাঁড়ান পুলিশ দেখে। তিনি পুলিশকর্মীদের কাছে গিয়ে জানান, স্ত্রীকে খুন করেছেন।’’ পুলিশ যা জেনেছে তা হল , যখন ঘুমিয়ে পড়ে মমতাজ এবং তাঁর দুই মেয়ে শেখ রহমত তখন প্রথমে তার স্ত্রীর গলায় ওড়না জড়িয়ে ফাঁস দিয়ে সজোরে চেপে ধরেন। মমতাজ যখন নেতিয়ে পড়ে তখন তার মাথায় একাধিকবার একটি শাবল দিয়ে আঘাত করেন শেখ রহমত।
শেখ রহমত কে পুলিশ যখন থানা থেকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছিল তখন তিনি বলেন, ‘‘সময়ে রান্না করত না আমার স্ত্রী। আমাকে প্রায় দিনই কাজ করে বাড়ি ফিরে রান্না করতে হত। কোনও দায়িত্বপালন করত না সে আমার বিষয়ে।’’
অন্য দিকে নিহতের এক প্রতিবেশী রেণু বিবি নাম তিনি বলেন, ‘‘লটারির টিকিট কাটা নেশা ছিল রহমতের । এ জন্য বহু টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল বাজারে।’’
শেখ মোমিন শেখ রহমতের শ্বশুর বলেন, ‘‘ বাড়ির কাজ নিয়ে মাঝেমধ্যে মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত। যদিও স্বামী-স্ত্রী অশান্তির মধ্যে আমি কখনোই নাক গলাই নি। কিন্তু ও আমার মেয়েকে এ ভাবে খুন করতে পারে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি।’’