মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে একটি চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটেছে। এখানে এক ব্যক্তি প্রথমে তার বন্ধুকে হত্যা করে, তারপর তার মৃতদেহের কাছে একটি বিষাক্ত কোবরা সাপ রাখে, যাতে সেটা দেখে এমনটা অনুমান হয় যে সাপের কামড়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তবে বন্ধুর এই পরিকল্পনা সফল হয়নি, কেননা ময়নাতদন্ত রিপোর্টে খুনের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করে জেলহাজতে পাঠায়।
ঘটনাটি মিসরোদ থানা এলাকার। ভোপালের অতিরিক্ত ডিসিপি রাজেশ সিং ভাদৌরিয়া সংবাদ সংস্থা ‘আজ তক’-এর সাথে কথোপকথনের সময় বলেন যে বুধবার নাভাল সিংয়ের মৃতদেহ তার বন্ধু সন্দীপ বাঘমারের বাড়িতে পাওয়া গেছে। পেশায় বাস চালক ছিলেন নেভাল। সন্দীপ বাঘমারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত করলে মৃতদেহের কাছে একটি কোবরা সাপও মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
রাতে মদ খেয়ে বিবাদে খুন
পুলিশ বন্ধু সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, রাতে নেভাল ও তার বন্ধুরা একসঙ্গে মদ পান করেছিল। অনেক রাত হওয়ায় সন্দীপ নাভালকে তার ঘরেই ঘুমাতে বলে। পরের দিন সকালে দেখেন ন্যাভাল মারা গেছেন।
ঘটনাস্থলে মৃত কোবরা পাওয়া গেছে:
পুলিশ ঘটনাস্থলে মৃতদেহের কাছে একটি মৃত কোবরা সাপ দেখতে পায়, যা থেকে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল যে রাতে ঘুমানোর সময় সাপের কামড়ে মারা যেতে পারে নেভাল। তবে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। অতিরিক্ত ডিসিপি ভাদৌরিয়া বলেছেন যে পোষ্ট মর্টেম রিপোর্টে সাপের কামড়ের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এবং নেভালের শরীরে কোনো বিষ পাওয়া যায়নি। এছাড়া শরীরে সাপের কামড়ের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পোষ্ট মর্টেম রিপোর্টে আরও জানা যায় যে শ্বাসরোধে নেভালের মৃত্যু হয়েছে। এমতাবস্থায় পুলিশের গোটা বিষয়টি বুঝতে বেশি সময় লাগেনি এবং তারা সন্দীপকে কড়া জেরা শুরু করে।
মুখে ও নাকে কাপড় পেচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়
পুলিশ জানিয়েছে, যেহেতু নিহত রাতে সন্দীপের বাড়িতেই ছিল। তাই তার সন্দেহ আরও গভীর হয়। প্রথমে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল সন্দীপ। তবে কড়া জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে যে রাতে ঝগড়ার সময় সে ন্যাভালকে তার মুখে ও নাকে কাপড় পেচিয়ে হত্যা করে এবং পুলিশকে তদন্ত কে বিভ্রান্ত করতে একটি মৃত সাপ তার মৃতদেহের কাছে রেখেছিল।
বর্তমানে অভিযুক্ত সন্দীপকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তিনি একাই ন্যাভালকে খুন করেছেন নাকি অন্য কেউ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।