তামিলনাড়ু থেকে একটি লজ্জাজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে। এখানে এক মা তার নিজের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করিয়েছেন। আর এই ধর্ষণ করেছেন মায়ের প্রেমিক। দুজনেরই উদ্দেশ্য ছিল ধর্ষণের মাধ্যমে মেয়েটিকে গর্ভবতী করা। এরপর হাসপাতালে তার ডিম্বাণু বিক্রি করে তার বিনিময়ে যে টাকা কামানো।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি তামিলনাড়ুর সালেম জেলার। এখানে এক মহিলা প্রায় দশ বছর আগে তার স্বামীর সাথে ডিভোর্স করেছিলেন। ওই নারী তার নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে তার প্রেমিকের সঙ্গে থাকতেন। ২০১৭ সাল থেকে তিনি একটি জঘন্য খেলা শুরু করেছিলেন। যেটা ছিল তার মেয়ের শরীর ও গর্ভের কারবার। প্রেমিককে দিয়ে নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করাতেন ওই নারী। মেয়ে গর্ভবতী হলে স্থানীয় হাসপাতালে তার ডিম্বাণু বিক্রি করা হতো।
এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে, তদন্ত চলছে
এই ১৬ বছরের নির্যাতিতা নাবালিকা একদিন সুযোগ পেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে। প্রাথমিক তদন্তের পরে, তামিলনাড়ু পুলিশের কাছে ঘটনাটি সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে এবং মেয়েটির মা, মায়ের প্রেমিক এবং এর সাথে জড়িত অন্য একজন মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা হচ্ছে। এই ঘটনায় পুরো চক্রের সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। ৩৮ বছর বয়সী এই মহিলার নাম এস. ইন্দ্রাণী ওরফে সুমিয়া, তার ৪০ বছর বয়সী প্রেমিকের নাম এ.কে. সাঈদ আলী। যে প্রাইভেট হাসপাতালগুলিতে ডিম্বাণু বিক্রির ব্যাবসা চলছিল তা হল তামিলনাড়ুর ইরোড, পেরুন্দুরুই, সালেম এবং হোসুর জেলায়। অন্য এক ৩৬ বছর বয়সী মহিলা, মালতী ছিলেন দালালের ভূমিকায়।
পুলিশ জানায়, নির্যাতিতা তাদের জানান, প্রায় দশ বছর আগে তার বাবা-মা আলাদা হয়ে যায়। মা তাকে তার সাথেই রাখতেন। তার সাথে তার প্রেমিকও থাকতেন। এই প্রেমিক তাকে প্রায়ই ধর্ষণ করত। মায়ের সম্মতিতেই এসব করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী তার অভিযোগে বলেছেন যে যখন সে গর্ভবতী হয়ে পড়তো তখন তার ডিম্বাণু হাসপাতালে বিক্রি করা হতো। যার বিনিময়ে ২০,০০০ টাকা দেওয়া হতো। এতে একজন মহিলা কমিশন হিসেবে পাঁচ হাজার টাকা রাখতেন। বাকি পনের হাজার টাকা তার মা ও মায়ের প্রেমিক রাখতেন। এটি প্রতি বছর দুবার করে ঘটতো। পুলিশ জানায়, মেয়েটি তার অভিযোগে বলেছে, এ.কে. নামের ২৫ বছর বয়সী এক ছেলে জন, তার জন্য একটি জাল আধার কার্ড তৈরি করেছিল, যেখানে তার নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল এবং তাকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসাবে দেখানোর জন্য তার জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে ১৯৯৫ করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত মে মাসে নির্যাতিতা মেয়েটি কোনোভাবে পালিয়ে তার বন্ধুর বাড়িতে পৌঁছে যায়। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি জানান। আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন বন্ধু। এ ঘটনায় মেয়েটির মা, প্রেমিক ও অপর এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়াও যে হাসপাতালে এই পুরো ঘটনাটি ঘটেছে এবং এর সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সবাইকে শনাক্ত করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে জাল আধার কার্ড ও আরও কিছু জাল নথি তৈরির ঘটনাও সামনে এসেছে। পুলিশ সব দিক খতিয়ে তদন্ত করছে।