সদ্যোজাত সন্তানকে বিক্রি করে সেই টাকায় নিজের শখ পূরণ করলেন মা। ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের। জানা গিয়েছে এক দম্পতির কাছে মাত্র ১৫ দিন বয়সী একটি নবজাতক কে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল। নিজেদের কমিশন কেটে নেওয়ার পর অর্ধেক টাকা শিশুটির বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেয় দালালরা। এরপর ওই টাকা দিয়ে ওয়াশিং মেশিন, টিভি, ফ্রিজ, কুলার ও মোটরসাইকেলসহ মূল্যবান শখের জিনিসপত্র কিনে নেন ওই দম্পতি।
বলা হয় যে তার সন্তানকে মা পৃথিবীর বাকি সকলের চেয়ে ৯ মাস বেশি চেনে। কারণ এতদিন তার গর্ভে বেড়ে ওঠার পরই জন্ম নিয়ে পৃথিবীতে পা রাখে শিশুটি। কিন্তু এই পাষাণ হৃদয় মা সন্দেহ আর টাকার লোভে সন্তানের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য সব কিছু সরিয়ে রেখে ১৫ দিনের নিষ্পাপ শিশুকে বিক্রি করে দেন। এরপর প্রাপ্ত টাকা দিয়ে কুলার, ফ্রিজ ও টিভি ইত্যাদি জিনিসপত্র কেনা হয়।
এই মর্মান্তিক ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরের হীরা নগর থানা এলাকার। এখানে গৌরী নগর এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বাস করেন অন্তর সিং ও তার স্ত্রী শাইনা বাঈ। শাইনা বাঈ এর এটি দ্বিতীয় বিয়ে। অন্তর সিং একজন দিন মজুর এবং স্ত্রী শাইনা একজন গৃহবধূ। বছর ২৩ এর এই মহিলা বিয়ের পর গর্ভাবস্থার কথা জানতে পারলে তার স্বামীর সন্দেহ হয় যে সন্তানটি তার নয়, প্রথম স্বামীর। এরপর গর্ভের সন্তানকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর পর বাড়িওয়ালা নেহা সূর্যবংশীর সাহায্য নেওয়া হয়। তারপর ভগীরথপুরার বাসিন্দা দালাল পূজা ভার্মা, নেহা ভার্মা এবং নীলম ভার্মার সাহায্যে শিশুটির ডিল করেন দেওয়াস জেলার লীনা নামে এক মহিলা। হাসপাতালে প্রসবের মাত্র ১৫ দিন পর চুক্তি অনুযায়ী প্রসূতি মায়ের কাছ থেকে নিয়ে নবজাতক শিশুকে মহিলা দালালের মাধ্যমে ক্রেতা নারীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।
হীরানগর থানার ইনচার্জ সতীশ প্যাটেল জানিয়েছেন, দেওয়াসের লীনার কাছ থেকে ৫.৫০ লক্ষ টাকায় শিশুটির লেনদেন করা হয়েছিল। সবাই নিজেদের ভাগের কমিশন কেটে নিয়ে শিশুটির বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেন মাত্র ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এরপর ওই টাকা দিয়ে টিভি, ফ্রিজ, কুলার, ওয়াশিং মেশিন ও মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র কিনলেন শিশুটিকে পিতা মাতা ওই দম্পতি।
একজন সমাজকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে এবং সক্রিয়তা দেখিয়ে শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শিশুর বাবা-মা সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ ওই শিশুটির মা শাইনা বাঈ, দালাল পূজা ভার্মা, নেহা সূর্যবংশী, নেহা ভার্মা, নীলম ভার্মা এবং একজন নাবালককে হেফাজতে নিয়েছে, যখন শিশুটির বাবা অন্তর সিং সহ অন্যান্য অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।