ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে বসে ১৯০ কিলোমিটার পথ পাড়ি!! শুনে অবাক লাগলেও এক যুবক রাজগীর থেকে গয়া পর্যন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনের নীচে ঢুকেই ১৯০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিরাপদে বেরিয়েও আসে। সেন্ট্রাল মোটরের কাছে বুদ্ধপূর্ণিমা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে বসে ছিলেন ওই যুবক।
রাজগীর থেকে গয়া পর্যন্ত সেই যুবক ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে ঢুকে যাত্রা করেন। শুনতে একটু অদ্ভুত লাগলেও এটা সম্পূর্ন সত্যি। ট্রেনের চালক গয়া রেলস্টেশনে নামতেই ইঞ্জিনের নিচের দিক থেকে জল চাওয়ার আওয়াজ শুনতে পায়। ড্রাইভার নিচের দিকে তাকালে তার চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। তিনি রেলওয়ের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান। তারপর আরপিএফ ও রেলের কর্মীদের সাহায্যে তাকে টেনে বের করা হয়। অবশ্য উদ্ধার পেতেই দৌড়ে পালিয়ে যান সেই যুবক।
বুদ্ধপূর্ণিমা এক্সপ্রেসের ঘটনা:
ঘটনাটি সোমবার ভোর ৪টায় গয়া স্টেশনে রাজগীর-পাটনা-গয়া-বারানসী-সারনাথ বুদ্ধপূর্ণিমা এক্সপ্রেসের। ঘটনার পর থেকে ওই যুবক নিখোঁজ হয়। চালকের ভাষ্যমতে, সে সেন্ট্রাল মোটরের (ট্র্যাকশন মোটর) কাছে ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে বসে ছিল। রেলের কর্মচারীরা বলছেন, যুবকটি যে জায়গায় বসেছিল সেখানে প্রবেশ করা অসম্ভব। রেলকর্মীরা এটাকে এক প্রকার পাগলামি হিসাবেই দেখছেন।
ইঞ্জিনের নিচ থেকে জল চাওয়ার আওয়াজ এলেই রহস্য উন্মোচিত হয়:
সোমবার ভোর ৪টা নাগাদ বুধপূর্ণিমা এক্সপ্রেস রাজগীর থেকে পাটনা হয়ে গয়া পৌঁছে। ওই ট্রেনের চালক এস চৌধুরী প্লাটফর্মে নামতেই ইঞ্জিনের নিচ থেকে একজনের জল চাওয়ার শব্দ শুনতে পান। জল চাওয়ার আওয়াজ শুনে কয়েক মুহূর্ত হতবাক হয়ে গেলেও টর্চের সাহায্যে ইঞ্জিনের নিচে তাকালে একজনের ফিসফিস শব্দ শুনতে পান তিনি। সেন্ট্রাল মোটরের নিচ থেকে আওয়াজ আসছিল।
ইঞ্জিনের নিচে থাকা খুবই কঠিন:
তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টি ডেপুটি এসএসকে জানান। আরপিএফ পোস্টেও এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। এর পরে, আরপিএফ এবং রেল যাত্রীদের সহায়তায় কোনওভাবে ওই ব্যক্তিকে টেনে বের করা হয়। রেলওয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইঞ্জিনটি WAP 7 মডেলের ABB ইঞ্জিন। একজন ব্যক্তির পক্ষে এর নীচে বসে যাওয়া খুব কঠিন এবং সেখানে বসে যাত্রা করা আরও কঠিন। যে যুবককে ইঞ্জিনের তলা থেকে বার করা হয়েছে তার কোনো পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কোনো কর্মকর্তাই কিছু বলতে পারছেন না। সবাই অবাক।
রেলের কর্মচারীদের বক্তব্য অনুযায়ী, ট্রেনটি রাজগীর থেকে ছেড়েছিল। রাজগীর থেকে গয়া পর্যন্ত ট্রেনটি ছয়টি স্থানে দুই মিনিট ১০ সেকেন্ডে থামে। এদিকে ইঞ্জিনের নিচে বসাও সম্ভব নয়। রাজগীরের ইঞ্জিন ইয়ার্ডে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ওই যুবক এর নিচে বসে যান বলে রেলের কর্মচারীদের ধারণা।