কুসংস্কারেরও একটা সীমা আছে। অনেক ঘটনা এদেশে বারবার সামনে এসেছে যেখানে মানুষের অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার দেখলে অবাক হতে হয়। কিন্তু শুধু ভারতে নয় বিদেশেও এমন অনেক ভন্ড বাবা আছে। সম্প্রতি বিদেশ থেকে এমন একটি ঘটনা সামনে এসেছে যা শুনলে চমকে যাবেন।
থাইল্যান্ডে, পুলিশ এক অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে। এই ব্যক্তির নাম থাওয়ে নানরা (Thawee Nanra) এবং তার বয়স ৭৫ বছর।এই ভন্ড বাবা সম্পর্কে দাবি করা হয়েছে যে তার ভক্ত বা অনুসারীদের তিনি নিজের প্রস্রাব পান করাতেন এবং মলও খাওয়াতেন। প্রকৃতপক্ষে, তার ভক্তদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে তার মল খেলে এবং প্রস্রাব পান করলে তারা নানা রোগ ও শারীরিক সমস্যা থেকে রক্ষা পাবে। ওই ভন্ড বাবার বক্তব্য অনুযায়ী তিনি সিদ্ধ পুরুষ। তাঁর মল, মূত্র,থুতুতে সেরে যাবে শারীরিক সব সমস্যা। বহু মানুষকে অজ্ঞাতসারেও নিজের প্রস্রাব খাইয়েছেন ওই বাবা। শুধু তাই নয় তার আশ্রমে পাওয়া গেছে বহু অজ্ঞাতপরিচয় মৃতদেহ।
‘বিজনেস ইনসাইডার’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর থাইল্যান্ডের চাইয়াফুম (Chaiyaphum) জঙ্গলে তাঁর বাড়ি যেখান থেকে এই বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ যখন এই ভুয়া বাবাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন বাবার অনুসারীরা পুলিশ অফিসারদের বাধা দিতে গিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
৭৫ বছর বয়সী বাবা (থাইল্যান্ড পুলিশ) আশ্রমের ভেতর থেকে ধরা পড়েন
একই সময়ে থাই পুলিশ সংবাদ সংস্থা এপিকে জানিয়েছে, বাবার আশ্রম থেকে ১১টি সন্দেহজনক মৃতদেহও পাওয়া গেছে। যা বাবার অনুগামীদের মৃতদেহ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দ্য থাই এনকোয়ারারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাউই নানরার আশ্রমে অভিযান চালিয়ে আরো দেখা যায় যে তিনি অবৈধভাবে জমি দখল করেছেন এবং কোভিড নিয়ম মানছেন না। একই সময়ে, দ্য ব্যাংকক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে সমস্ত মৃতদেহগুলি উদ্ধার করা হয়েছে তার সবকটিই কফিনে রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ৫টি লাশের ডেথ সার্টিফিকেট খুজেঁ পাওয়া গিয়েছে।
প্রাদেশিক গভর্নর ক্রাইশর্ন কংচলাদ বলেছেন যে যখন অভিযান চালানো হয়েছিল, তখন থাউই নানরার সাথে অন্তত কয়েক ডজন লোক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে মানুষ এখনো এ ধরনের কুসংস্কারে বিশ্বাসী। তবে এটা শুধু কুসংস্কারের বিষয় নয়। এখানে মানুষের মৃতদেহও পাওয়া গেছে। আমরা এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সমস্ত সংস্থার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করব যাতে যে ব্যক্তিদের মৃতদেহ পাওয়া গেছে তাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা যায়। থাউই নানরা সম্পর্কে দ্য নেশন এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে তিনি নিজেকে সকল ধর্মের পিতা বলে দাবি করতেন।
একই সময়ে, এটিও দাবি করা হয়েছে যে ৮০ বছর বয়সী একজন মহিলা যিনি থাভিতে এই বাবার আশ্রমে গিয়েছিলেন তিনি আর ফিরে আসেননি। এই মহিলার কন্যা এটি জানিয়েছেন। আরও বলেছেন যে থাভির অনুসারীরা প্রস্রাব পান করতেন, শ্লেষ্মা এবং মলও গ্রহণ করতেন যাতে তাদের কোনও শারীরিক সমস্যা না হয়।