Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
FEATURED ট্রেন্ডিং

খিদের জ্বালায় পড়শীদের দোরে দোরে গিয়ে খাবার চায় দুই শিশু! তাই শিকলে বেঁধে রাখে বাবা মা

খুদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। তাই কঠিন বাস্তবের সামনে বাবা-মা ও যেন অসহায়। খুদা তাড়িত দুই শিশুর খিদের জ্বালা তাদের এমন পরিস্থিতির মুখে ফেলেছে যে নিজেদের সন্তানকে তারা বাধ্য হচ্ছে লোহার শিকলে বেঁধে রাখতে। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের রংপুরে। জানা গিয়েছে রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভার পকিহানা গ্রামের রেলবস্তির দুই বাচ্চা ছেলের জীবন বাধা পড়েছে শিকলে। ওই দুই ভাইয়ের নাম সুমন হোসেন (১০) ও সিমন হোসেন (৮)।

কিন্তু কেন তাদের বেঁধে রাখা হচ্ছে শিকলে? বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ওই শিশুটির পরিবার ভীষণ দরিদ্র। তাদের বাবা আমির হোসেন (বয়স ৬০ বছর) বাজারে গরু কেনাবেচায় মধ্যস্থতাকারী রূপে কর্মরত। মা শেফালী বেগম (বয়স ৩২) গৃহবধূ। রেল বস্তিতে টিনে ঘেরা একটি ঝুঁপড়িতে পরিবার নিয়ে বাস করেন আমির হোসেন।

দুবেলা দুমুঠো খাবার জোটানো দায়। কিন্তু শিশুমন বুঝতে পারেনা সংসারের বাস্তবতা। সইতে পারে না ক্ষুধার তাড়নাও। তাই খিদের জ্বালায় তারা প্রতিবেশীদের দোরে ঘুরে ঘুরে খাবার চায়। কখনো বা কারো গাছ থেকে লুকিয়ে ফল ছিঁড়ে খায়। প্রতিবেশীরা সহ্য করতে পারে না এসব। এসে তাদের বাবা-মা কে দু’কথা শুনিয়ে যায়। কিন্তু বাবা-মার তো উপায় নেই সন্তানদের ক্ষুধার জ্বালা মিটানোর। তাই তাদের আটকাতে বাধ্য হয়েই সুমনকে মাস ছয়েক ধরে এবং সিমনকে ১৫ দিন ধরে ঝুপড়ির উঠানে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন মা–বাবা।  

শিশুদের কেন শেকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন সেই বিষয়ে জানতে চাইলে শেফালী বেগম প্রথম আলো কে বলেন, ‘সারা দিন শিকল বাঁধা অবস্থায় রাখতে হয়। নাহলে তারা পালিয়ে যায়।’ তিনি আরো জানান প্রতিবেশীদের কটুক্তি শুনতে শুনতে তাদের জীবন শেষ হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে সন্তানদের শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে যাতে কারো বাড়ি গিয়ে জ্বালাতন না করে। তার বক্তব্য “আমার ছেলে দুটোর জন্য হয়তো বস্তিবাসীরা শান্তিতে নেই। ওরা বাধা থাক, কষ্ট পাক তাও সই। কিন্তু প্রতিবেশীরা শান্তিতে থাকুক।”

প্রসঙ্গত শিশুদের বাবা আমির হোসেন আগেও একটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর ৭ ছেলে মেয়ে ছিল। দারিদ্র্যের কারণে তারা অন্যত্র চলে গেছে। এখন তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর থেকে তার আট ছেলে মেয়ে। এর মধ্যে দুজন প্রসবের সময় মারা গেছে। ৫ দিনের একটি সন্তানকে তারা দিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে তাদের রয়েছে আর পাঁচ সন্তান। কিন্তু ষাটের কাছাকাছি বয়স হওয়ায় এখন আর বস্তুরই করতে পারেন না আমির হোসেন নামক ওই ব্যক্তি। পাঁচ সন্তানকে কিভাবে মানুষ করবেন সেই ভেবে দিশেহারা ওই পরিবার। বদরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

Related posts

করোনা ডেল্টা প্লাস ভেরিয়েন্ট ক্রমশই বাড়াচ্ছে থাবা! তবে কি করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু?

dainikaccess

চিতা বাঘের লেজ ধরে টানাটানি যুবকের! তারপরেই যা হলো… দেখা গেল ভিডিওতে!

News Desk

রাতে ঘুমিয়ে ঘুম ভাঙলো ১৬ দিন পর! অভিশপ্ত ঘুমে তছনছ হয়ে গেল মহিলার জীবন

News Desk