স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে অশান্তি ও তিক্ততা থাকাটা সাধারণ একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু যারা এর সুযোগ নিয়ে আস্থা ভঙ্গ করে তারাও কম কিছু নয়। এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছে দিল্লীর সীমাপুরী (Seemapuri Area) এলাকায় যেখানে এক দম্পতির মধ্যে কলহের ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে একাই থাকতেন ওই মহিলা। কিন্তু চাকরি দেওয়ার অজুহাতে এই সুযোগ কাজে লাগায় ওই মহিলার স্বামীর বন্ধু। মহিলাকে কাজের জন্য ডেকে, লোকটি তার দুই বন্ধুর সাথে জোরপূর্বক মহিলাকে গণধর্ষণ করে।
অভিযুক্তরা ওই মহিলার অশ্লীল ভিডিওও তৈরি করেছে বলে জানা গিয়েছে। অভিযুক্তরা নির্যাতিতা মহিলাকে হুমকিও দিয়েছিল যে সে ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ করলে তারা তার ভিডিও ভাইরাল করবে। ভয়ে নির্যাতিতা কাউকে কিছু জানায়নি। তার পরও অভিযুক্তরা তাকে ছাড়েনি। অশ্লীল ভিডিও ডিলিট করার জন্য নির্যাতিতাকে নিজের মেয়েদের নিয়ে সীমাপুরী আসতে বলা হয়। এরপর অভিযুক্তরা ভিকটিমকে গাড়ি থেকে ফেলে তার তিন মেয়েকে অপহরণ করে পালিয়ে যায়।
নিগৃহীত ওই মহিলার অভিযোগ যে তিনি অবিলম্বে পুলিশকে ডেকে জানান এবং অভিযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ তাকে তাৎক্ষণিক কোনো সাহায্য করেনি। শেষমেষ নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার গণধর্ষণ, অপহরণ ও হুমকির মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে সীমাপুরী থানার পুলিশ।
তথ্য অনুযায়ী, নির্যাতিতা গাজিয়াবাদের ইন্দিরাপুরম এলাকায় স্বামী ও তিন মেয়ের সঙ্গে থাকতেন। স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধের পর প্রায় ৫ মাস আগে লক্ষ্মী নগরে এক বন্ধুর বাড়িতে মেয়েদের নিয়ে থাকতে শুরু করেন। গত মাসের ১লা মার্চ তিনি মোরাদাবাদ থেকে আনন্দ বিহারে এসেছিলেন কোনো কারণে। সেখানে হঠাৎই তার স্বামীর এক পরিচিত বন্ধুর সাথে দেখা হয়।
ওই ব্যক্তি মহিলাকে আর মোরাদাবাদে যেতে বারণ করেন। ওই ব্যক্তি মহিলাকে আশ্বস্ত করেন এই বলে যে তিনি তাঁকে দিল্লি সংলগ্ন গাজিয়াবাদের শহীদ নগরে একটি রুম ভাড়ার ব্যবস্থা করে দেবেন এবং খরচ মেটাতে চাকরির ব্যবস্থাও করবেন। এইভাবে সে তার ফাঁদে পড়ে যায়। ওই ব্যাক্তি তাকে শহীদ নগরে একটি ভাড়া রুম দেয়।
এরপর ৪ মার্চ তাকে চাকরির জন্য পুরাতন সীমাপুরীতে ডাকা হয়। মহিলাটি সেখানে পৌঁছলে তিনি তাকে একটি ঘরে নিয়ে যান, যেখানে মহিলার স্বামীর বন্ধু ছাড়াও আরও দু’জন উপস্থিত ছিলেন। কক্ষে তালা লাগিয়ে তাকে তিনজনই জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং মোবাইল থেকে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে। পুলিশে অভিযোগ করলে তারা ভিডিওটি ভাইরাল করার হুমকি দিতে থাকে। এরপরে ভয়ে চুপ থাকলেও তিন মেয়েকে অপহরণের পর আর চুপ থাকেননি মহিলা। পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে।