অনলাইনে ঋণের নামে প্রতারণাকারী চক্রের পর্দা ফাঁস করে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। এই লোকেরা অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে প্রথম দুই মাসের জন্য সুদমুক্ত ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত। যার দ্বারা প্রলোভিত হয়ে সেই সব অ্যাপ থেকে লোন নিত মানুষ। কিন্তু এরপরেই সে পড়তো ফাঁদে। লোন নেওয়ার পরের দিন থেকেই ঋণগ্রহীতার ফোন হ্যাক করে নিহতের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সবাইকে ফোন করে ঋণের বেশি টাকা ফেরত দিতে বলতো। রীতিমত নিগৃহীত হতে হত ঋণগ্রহীতা কে।
এই ধরনের প্রতারণার অভিযোগ পেয়ে প্রতারণাকারী চক্রের পর্দা ফাঁস করে পুলিশ। এই চক্রের সাথে যুক্ত সমস্ত অভিযুক্তকে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানার বিভিন্ন শহর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসলে কলকাতার এক বাসিন্দা গত ১৫ই মার্চ সাইবার ক্রাইম বিভাগের কাছে অভিযোগ করেছিলেন যে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং ভারতের নানা দেশের নম্বর থেকে তার আত্মীয় এবং বন্ধুদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপ কল করা হচ্ছে। তাদের সবাইকে তার নেওয়া ঋণ ফেরত দিতে বলা হচ্ছে। যদিও তিনি কখনো কোনো ঋণ নেননি এবং যারা ফোন করছেন তারা অত্যন্ত অশালীন ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করছেন। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
দিল্লি থেকে হয় প্রথম গ্রেফতার:
তদন্তের সময়, দিল্লি পুলিশ জানতে পেরেছিল, যে যে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরগুলি ব্যাবহার করে লোকেদের হয়রানিমূলক কল করা হচ্ছে তা জালিয়াতি করে নেওয়া হয়েছিল। বেশিরভাগ নম্বরই আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের নানা অঞ্চলের। অভিযুক্তদের কাছে পৌঁছানোর জন্য দিল্লি পুলিশ তাদের অবস্থান ট্র্যাক করে। এরপর পুলিশ মানি ট্রান্সফার গেটওয়ের মাধ্যমে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করে। দিল্লির বিজবাসন এলাকা থেকে সোনু সিং নামে এক অভিযুক্ত কে প্রথম গ্রেফতার করা হয়।
এ পর্যন্ত মোট ৫ জন গ্রেফতার:
সোনু সিং কে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ফারুখাবাদ এলাকা থেকে বিকাশ সিংকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দুজনের কাছ থেকে সেই মোবাইল ফোনগুলিও উদ্ধার করা হয়েছে, যেগুলি থেকে অভিযুক্তরা লোকজনকে ফোন করে হুমকি দিত। এরপর হরপ্রীত ও বিকাশ নামক অভিযুক্ত দেরও গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা নিজেদের একটি অ্যাপ তৈরি করেছে। যা ডাউনলোড করার সময় অ্যাপটিতে বিভিন্ন ধরনের অনুমতি চাওয়া হয়। এখান থেকে প্রতারকরা সহজেই লোকজনের নম্বর বের করে নিত। এবং তাদের প্রতারণার শিকারে পরিণত করতো। পুলিশ জানিয়েছে, কৃষ্ণা নামের এক ব্যক্তি মানুষের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ক্রিপ্টো কারেন্সিতে রূপান্তর করে চীনে পাঠাতো। বর্তমানে এই চক্রের অন্য সদস্যদের খুজেঁ বার করতে পুলিশ আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।