সঠিক বয়সের আগে বিয়ে সমাজের জন্য হানিকারক। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রায় পৃথিবীর সব দেশেই সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। এমনকি বাল্যবিবাহ যে দণ্ডনীয় অপরাধও সে কথাও বারবার বাল্যবিবাহ বিরোধী প্রচারে বলা হয়। মনে করা হয় বাল্যবিবাহ যারা দেন তারা মূলত শিক্ষার অভাবেই এই কাজ করে। কিন্তু যদি শুনেন এই জাতীয় ঘটনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে একজন শিক্ষিকারই নাম! তাহলে? শুনে অবাক হতে হয় বটে। কিন্তু এমন একটি ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা সদরে এক মহিলা যিনি পেশায় শিক্ষিকা তিনি নিজের স্কুলপড়ুয়া ছেলে যে দশম শ্রেণীর ছাত্র তার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন এক পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীর। এমনকি ওই মহিলা শিক্ষিকা যে স্কুলে পড়ান, পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী ওই মেয়েটি সেই স্কুলেই পাঠরতা।
সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার দুই পরিবারের লোকজন গোপনে দশম শ্রেণির ছাত্রের সঙ্গে যাবতীয় রীতিনীতি মেনে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীর। তারা লুকিয়ে বিয়ে দিলেও সোমবার সকালবেলা এই ঘটনার কথা সকলের সামনে চলে আসে। লোক জানাজানি হয়ে যাবার পর সংবাদমাধ্যম জিজ্ঞাসা করলে সে দেশের শিক্ষা দপ্তরের এক উর্ধ্বতন কর্তা কার্যত স্বীকার করে নেন এটা সত্য ঘটনা। সাথে সাথে তিনি এও বলেন ‘এই প্রবণতা মারাত্মক এবং এখানে বাল্যবিবাহ কে উৎসাহিত করা হয়েছে।’ কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষিকাকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। স্কুল শিক্ষিকা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে ওই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। ‘বিয়ে করতে চেয়ে জেদ করে আমার ছেলে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। এমনকী নিজেকে মেরে ফেলার চেষ্টাও করেছিল। এই সব কারণেই বাধ্য হয়েই বিয়ে দিতে হয়েছে।’
এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার কিছুদিন পর স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন আগে ওই প্রাথমিক স্কুলে কর্মরত ওই শিক্ষিকা এক পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে ছেলের বিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। শুক্রবার তার উদ্যোগেই এই নাবালক নাবালিকার বিয়ে হয়। প্রসঙ্গত এই খবরটি প্রকাশ্যে আসার পর শিক্ষা দফতরের তরফে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। শিক্ষা দফতরের তরফে বিষয়টির সত্যতা অনুসন্ধানের জন্য এক আধিকারিককে পাঠানও হয়েছিল। তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্ত শিক্ষিকা তাঁর কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিজের কর্মকাণ্ডের লিখিত বিবৃতিও দেন। এখন ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ শিক্ষা দপ্তর সেটাই দেখার।