মিড ডে মিল সার্ভিসে পাওয়া খাবারের মধ্যে নেই ডিম, আর সেই কারণেই প্রতিবাদ করেছিলেন এক প্রসূতি, এই প্রতিবাদ করায় ওই প্রসূতিকে বেধড়ক মারধর করা হল মাটিতে ফেলে রেখে এখানেই থেমে থাকেনি আইসিডিএস কেন্দ্রের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তার পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠল। প্রসূতি জাসমিনা লস্কর নামের ওই মহিলাকে গুরুতর জখম অবস্থায় কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে কুলপি ব্লকের দক্ষিণ আকড়া বেড়িয়া আইসিডিএস কেন্দ্রে। এরপর পুলিশ সেখানে পৌছায় ওই মহিলার গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই অভিযুক্ত শিক্ষিকা দেবলা সর্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢোলাহাট থানার পুলিশ। গত শনিবার ওই ধৃত অভিযুক্তকে কাকদ্বীপ আদালতে তোলা হয়েছে। এই ঘটনায় ওই এলাকায় চূড়ান্ত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দেবর্ষি মুখোপাধ্যায় কুলপির বিডিও জানান, সিডিপিওর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হবে।
প্রসূতি জাসমিনা লস্কর বেশ অনেক দিন ধরেই গ্রামের আইসিডিএস সেন্টারে সকালের দিকে মিড ডে মিলের খাবার আনতে গিয়ে খাবার পাননি। ঐদিন সকালেও তিনি আইসিডিএস সেন্টারে খাবার আনতেই যান। কিন্তু ওই প্রসূতি খাবার পাওয়ার পর দেখেন যে তিনি ডিম পাননি। তাই নিজের প্রাপ্য ডিম চেয়েছিলেন যদিও ওই শিক্ষিকা তাকে ডিম দিতে অস্বীকার করেন। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে তিনি ওই প্রসূতি প্রতিবাদ করায় তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এমনকি তার পেটেও লাথি মেরে আঘাত করেন। জাসমিনা নামের ওই মহিলা এই ঘটনার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই খবর জানাজানি হতেই আইসিডিএস কেন্দ্রের সামনে গ্রামবাসীরা এসে জড়ো হন। ওই শিক্ষিকা পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পালিয়ে যান। ঢোলাহাট থানায় গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে পরে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষিকা দেবলা সর্দারকে অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে।
প্রসূতির ভাসুর আনারুল লস্কর বলেন, ”খাবার আনতে আইসিডিএস সেন্টারে গেলে বৌমাকে দিনের পর দিন খাবার না দিয়ে ঘোরাচ্ছিল। অন্তঃসত্ত্বা বৌমা। খাবারে ডিম না থাকায় তা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল বলেই ওই শিক্ষিকা তাকে মারধর করে ।”
ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আইসিডিএস কেন্দ্রের বাচ্চাদের দীর্ঘদিন ধরে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হত না। বাচ্চারা ঠিকমতো খাবার পেত না লকডাউনের সময়ও বলে অভিভাবকরা জানান। যখন অভিভাবকরা প্রতিবাদ করতেন তখন সেই অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন ওই শিক্ষিকা। এমনকি ওই আইসিডিএস সেন্টারের বাচ্চাদের মারধর করত বলে অভিযোগ। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কোনও শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েও।