রাজস্থানের ভরতপুরে স্ত্রীকে নাস্তানাবুদ করতে ভিডিও কল (Video Call) করে নিজের গাড়িতেই আগুন ধরিয়ে দিলেন উন্মাদ স্বামী। তার এই অদ্ভুত খামখেয়ালীপনার কারণে ওই ব্যক্তির জ্বলন্ত গাড়ির ঠিক পাশেই দাঁড় করিয়ে রাখা আরেকটি গাড়িতেও আগুন ধরে যায়। ওই ব্যক্তির গাড়ি আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন এমন উন্মত্ত কার্যকলাপের ব্যাপারে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তারা তৎপরতার সাথে সেখান থেকে আশপাশে রাখা সব গাড়ি সরিয়ে নেন। এদিকে, দ্বিতীয় জ্বলন্ত গাড়ির মালিকও সেখানে পৌঁছলে এই দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান। তার গাড়িটিকে কোনমতে জ্বলন্ত অবস্থাতেই সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যান এবং বহু চেষ্টাতে আগুন নেভাতে সক্ষম হন।
এদিকে খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে উন্মাদ স্বামীকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। এদিকে পাগল ওই ব্যক্তির স্ত্রী তার বাবা সহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। তিনি বলেন যে তিনি স্বামীর কার্যকলাপে বিরক্ত কিন্তু এগুলো থামাতে কিছু করতে পারেন না। তবে পুলিশ এসে গাড়িতে জ্বলতে থাকা আগুন নিভিয়ে ফেলে।
ভরতপুরের সুরজমল নগর এলাকার বাসিন্দা কান্ত প্রসাদ জানান, তিনি ২০০৩ সালে তাঁর মেয়ে প্রীতিকে নদীয়া এলাকার বাসিন্দা প্রবীণের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর প্রবীণ প্রীতির সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে। জামাইয়ের অত্যাচারে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ব্যবহারের প্রতিবাদ করেন। কিন্তু প্রবীণ পাল্টায় না। স্ত্রীর অভিযোগ প্রবীণ সময়ে সময়ে উন্মাদ হয়ে ওঠে এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে। প্রবীণ ও প্রীতির দুই মেয়েও রয়েছে। প্রবীণ কখনো নিজের ক্ষতি করে, কখনো প্রীতির ক্ষতি করে কখনো বা ঘরের জিনিসপত্র ভাংচুর করে প্রীতিকে নির্যাতন করতে থাকে। একদিন আগেই প্রীতি বাবার বাড়িতে এসেছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রবীণ এর হঠাৎ কি হলো বোঝা যায়নি এবং সন্ধ্যায় মদ খেয়ে ফিরে সে স্ত্রীকে ভিডিও কল করে এই কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে।
সঙ্গে বোতলে পেট্রোল নিয়ে এসেছিল প্রবীণ। নদীয়া মহল্লার সুজন গঙ্গা খালের কাছে তার গাড়ি পার্ক করা ছিল। মদ্যপ অবস্থায় সেখানে পৌঁছে প্রবীণ স্ত্রীকে ভিডিও কল করেন। ভিডিও কল করার পর প্রবীণ প্রথমে গাড়িতে পেট্রোল ঢেলে তার পাঁচ মিনিট পর আগুন ধরিয়ে দেয়। এই পুরো দৃশ্যটি তিনি তার স্ত্রীকে লাইভ ভিডিও কলে (Live Video Call) দেখাতে থাকেন। তখন প্রীতি ফোনটা তার বাবার হাতে দেয়। শ্বশুর কান্ত প্রসাদও প্রবীণকে অনেক বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি কারও কথা শোনেননি। প্রবীণের গাড়িতে আগুন লাগলে তার গাড়ির পাশে দাঁড়ানো আরেকটি গাড়িতেও আগুন ধরে যায়। অন্যদিকে লোকজন জড়ো হতে দেখে পাশের মন্দির থেকে জল এনে আগুন নেভাতে শুরু করেন প্রবীণ। স্থানীয় লোকজনও ঘটনাটি পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। কিছুক্ষণ পর প্রবীণের শ্বশুর ও স্ত্রী প্রীতিও ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রবীণ কে হেফাজতে নেয়।