কাজের জন্য নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও মিলত না ছুটি। কাজ চলত দীর্ঘ সময় ধরে। প্রাপ্য ছুটি থাকলেও সেটি বাতিল করে দেওয়া হতো দিনের পর দিন। অত্যধিক কাজের চাপেই কি মানসিক অবসাদ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত? লিলুয়া রেল ইয়ার্ডে সিনিয়র এক ইঞ্জিনিয়ারের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় উঠল এই প্রশ্ন। অতিরিক্ত কাজের চাপে মানসিক অবসাদ থেকেই এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, অভিযোগ বিক্ষুব্ধ রেল কর্মীদের। অভিযোগ উপরতলার কর্মীদের চাপিয়ে দেওয়া অত্যধিক কাজের কারণেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন লাইটিং বিভাগের সিনিয়র সেকশনের ইঞ্জিনিয়ার গণেশ নস্কর। তার আত্মহত্যা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় লিলুয়া ইয়ার্ডে। শনিবার সারাদিন বিক্ষোভ প্রদর্শন হয় লিলুয়া ইয়ার্ড এ। প্রতিবাদে রেললাইনে মৃত ইঞ্জিনিয়ারের দেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান গণেশ বাবুর সহকর্মীরা। এই ঘটনায় হাওড়া ডিভিশনে সিনিয়র ডিভিশনাল ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (জেলারেল) বিকাশ আনন্দ কে দায়ী মনে করছেন তারা। তাঁর বদলির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
শনিবার দুপুরেবেলা লিলুয়া ইয়ার্ডের লাইটিং বিভাগের সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার গনেশ নস্করের প্রাণহীন দেহ পাওয়া যায় রেললাইনের ধারে। ইয়ার্ডে মুম্বই মেল ঢোকার সময় এর মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এরপরই সহকর্মীরা অভিযোগ তোলে, নিজেই আত্মঘাতী হয়েছেন গণেশ। শিফ্ট শেষ হলেও দীর্ঘসময়ের কাজের চাপ, ছুটি না পাওয়া ইত্যাদি নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক অবসাদগ্রস্ত ছিলেন তিনি। তা নাকি জানিয়েছিলেন নিজের সহকর্মীদেরও।
পূর্ব রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, ইদানিং সিনিয়র ডিইই বিকাশ আনন্দ কর্মচারী ও সুপারভাইজারদের অতিরিক্ত কাজের চাপ দিচ্ছিলেন। কাজের নির্ধারিত সময় শেষ হলেও মেলে না ছুটি। এই কারণে প্রবল মানসিক চাপে কর্মীরা। এইভাবে আগেও একজন কর্মচারী আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। অবিলম্বে তাঁকে সরানোর দাবি করেছেন তিনি। গণেশ বাবুর সহকর্মীরা কাজ বন্ধ করে মৃতদেহ রেল লাইনে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। ঘটনাস্থলে আরপিএফ পৌঁছলে বিক্ষোভ আরো চরম আকার নেয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্বরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানান, “লিলুয়া শর্টিং ইয়ার্ডে এক কর্মীর মারা গেছেন। এটা দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা, সেটা তদন্তাধীন। ময়নাতদন্তের পর আসল কারণ জানা যাবে। ইয়ার্ডের কর্মীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”