হিন্দু পাত্রের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গোড়া মৌলবাদীদের রোষের মুখে পড়লেন এক তরুণী। সেই তরুণী এবং তাঁর পরিবারকে সমাজ থেকে বহিস্কার করতে রীতিমত ফতোয়া জারি করেছে একটি মসজিদ কমিটি। গোড়া মৌলবাদের এমন মধ্যযুগীয় ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের (Bangladesh) শ্রীহট্ট জেলার কুলাউড়ায়।
দেশ শিক্ষা-দীক্ষা ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় অনেক এগিয়ে গেলেও এখনও অশিক্ষার ও ধর্মান্ধতার অন্ধকার কাটেনি। অনেক ক্ষেত্রেই মৌলবাদী শক্তিগুলি আইন নিজের হাতে তুলে বিচার শুরু করে। এবার শ্রীহট্ট জেলার কুলাউড়া এমনই এক কাণ্ডের সাক্ষী থাকল। এক তরুণীর আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা নিতে গিয়ে স্বাধীনচেতা চলাফেরা ও অমুসলিম ছেলে অর্থাৎ হিন্দু পাত্রকে বিয়ে করার ‘অপরাধে’ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ওই তরুণীর পরিবারকে সমাজচ্যুত করে মসজিদ কমিটি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কুলাউড়ার এই ঘটনাটি উঠে এলে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে মঙ্গলবার রাতে ইউএনও, ভুক্তভোগী তরুণী ঝর্ণা চৌধুরীর পরিবার ও গ্রামের মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন । কুলাউড়া থানার ওসি বিনয়ভূষণ দেব, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলামও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অবশেষে কমিটি দুঃখ প্রকাশ করেছে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে।
এই বিষয়ে আমেরিকা নিবাসী ওই তরুণী ঝর্ণা চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে তিনি জানান, “আমি কেমন পোশাক পরব, কার সাথে ছবি তুলব, কার সঙ্গে চলাফেরা করব সেটা আমার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অধিকার। এটা তো আমাকে এলাকার লোক ঠিক করে দিতে পারে না। মসজিদ কমিটির লোকজন অতিরিক্ত কৌতুহলী হয়ে অনধিকার চর্চার মাধ্যমে আমার পরিবারকে সামাজিক ভাবে একঘরে করে দিয়েছে। এসব পুরুষতান্ত্রিক মৌলবাদীদের প্রতিবাদ অনেক আগেই করতে পারতাম। তবে অভিযুক্তরা ইউপি চেয়ারম্যানের চেনাজানা হওয়ায় তার কাছে অভিযোগ করেও লাভ হয়নি।”