ওমিক্রন ( Omicron) প্লাস্টিক এবং মানুষের ত্বকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে- সম্প্রতি জাপানের একটি গবেষণা থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। যে কারণে ওমিক্রন ডেল্টার তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এর আগের আলফা, বিটা, গামা এই তিন ভ্যারিয়েন্ট কিন্তু ত্বকে ৫৬ ঘন্টার বেশি জীবিত থাকত না। সেক্ষত্রে ওমিক্রন জীবিত থাকছে প্রায় ১৯৪ ঘন্টা। এমনকী এর আগের দুই তরঙ্গে যাঁরা কোভিডে ( Covid-19) মারা গিয়েছিলেন তাঁদের শরীরে ১৬ ঘন্টার মত ভাইরাস বেঁচে ছিল। আবার যাঁদের ওমিক্রনে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে ভাইরাস জীবিত থাকছে ২১ ঘন্টা পর্যন্ত। যে কারণে ত্বকেও অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানিটাইজার ( Hand Sanitizer) ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে- সব সময় হাত ধুতে হবে এবং স্যানিটাইজার ব্যবহারও ভীষণ ভাবে জরুরি।
এমনকী গবেষকরা এটাও বলছেন, ওমিক্রন শনাক্তকরণে সবচেয়ে জরুরি হল নাকের সোয়াব। নাকের সোয়াপর পরীক্ষা করলেই সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়। যেহেতু ত্বকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত জীবিত থাকে এই ভাইরাস, তাই নাকের থেকে টিস্যু দিয়ে মুছেও কিন্তু নমুনা সংগ্রহ করা যেতে পারে। ইংল্যান্ডেও এখন আক্রান্তদের দ্রুত শনাক্তকরণের জন্য এই নাকের সোয়াবই নেওয়া হচ্ছে। আর এই Rapid antigen পরীক্ষায় কিন্তু সঠিক ফলাফলও আসছে।
জানুয়ারির প্রথমেই ওমিক্রন আক্রান্তদের জন্য সান ফ্রান্সিসকোতে একই সঙ্গে আরটি-পিসিআর আর Rapid antigen পরীক্ষা করা হয়। মোট ৭৩১ জনের উপর এই পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষাতে ৯৫ শতাংশেরও বেশি মানুষের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সেখানে এমন অনেকে ছিলেন যাঁদের গলা থেকে সোয়াব নেওয়ার পর রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল । কিন্তু পরবর্তীতে আবার নাক থেকে সোয়াব নেওয়া নয়। সেক্ষেত্রে কিন্তু রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এছাড়াও স্পেনে একটি পরীক্ষা চালানো হয়। সেখানেও দেখা গিয়েছে, গলার তুলনায় অনেক বেশি সঠিক রিপোর্ট এসেছে যখন নাকের থেকে সোয়াব নেওয়া হয়েছিল। গলা ব্যথা, চুলকোনোর কারণে অনেকেরই কাশি আসছে। যে কারণে সঠিক ফলাফল সব সময় পাওয়া যাচ্ছিল না।
তবে ওমিক্রনে এবার আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হলেও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। এছাড়াও বেশিরভাগ মানুষই বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন। যে সব বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরাও কিন্তু বাড়িতে নিয়মের মধ্যে থেকেই দ্রত সুস্থ হচ্ছেন। সেই সঙ্গে রোল-লক্ষণ তুলনায় অনেক হালকা। এর জন্য টিকার ভূমিকা রয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এমনকী অনেকেই বুস্টার ডোজ পেয়ে গিয়েছেন। যে কারণে কিন্তু সংক্রমণের তীব্রতা কম। যে কারণে টিকাকরণের উপরই বারবার জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। টিকাকরণ ঠিকমত হলে এবং যাবতীয় কোভিড বিধি মেনে চলা হলে কমবে করোনায় মৃত্যুহার- মনে করেন চিকিৎসকেরা।